মেয়ে বিয়ে করেছে ভিন জাতের ছেলেকে। এই ‘অপরাধে’ গ্রামের মোড়লদের বিধানে ‘শাস্তি’ পেতে হলো মেয়ের পরিবারের সদস্যদের।
‘শুদ্ধিকরণের’ নামে পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়দের মাথা মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। দু-চার জনের নয়, ৪০ জনের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
গ্রামের মোড়লদের বিধানেই ওই শাস্তি মাথা পেতে নিতে হয়েছে তাদের। সামাজিক বয়কটের হুমকির ভয়ে এবং সমাজের মধ্যে থাকার আদেশে এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
এই ঘটনা ওডিশার রায়গড় জেলার কাশীপুর ব্লকে।
রবিবার (২২ জুন) ডেইলি জং ও এই সময় অনলাইন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার কাশীপুরের বাইগনগুদা গ্রামে এই ঘটনা ঘটলেও তা জানাজানি হয়েছে শনিবার। তার পরেই পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন এলাকার পুলিশ কর্মকর্তা বিজয় সয়।
ওই গ্রামের হিন্দু তফসিলি জনজাতি পরিবারের এক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল পাশের গ্রামের হিন্দু তফসিলি জাতি পরিবারের এক যুবকের। কিন্তু তাদের বিয়ে কারোর মত ছিল না। তবে পরিবারের অমতেই বিয়ে করেন তারা। এর পরেই নেমে আসে শাস্তির খাঁড়া। ওই বিয়ের পরেই গ্রামে একঘরে হতে হয় ওই তরুণীর পরিবার এবং তার আত্মীদের।
তাদের বয়কট করার হুমকিও দেওয়া হয়। সেই সঙ্গেই গ্রামের মোড়লরা আদেশ দেন, ভিন জাতের ছেলেকে বিয়ে করে সামাজিক রীতি ভেঙেছেন তারা। এই কারণে গ্রামে সালিশি সভা বসিয়ে বিচার হয় তাদের।
সেখানে জানিয়ে দেওয়া, গ্রামে এবং সমাজের মধ্যে থাকতে হলে ‘শুদ্ধ’ হতে হবে তাদের। এই ‘শুদ্ধিকরণের’ অংশ হিসেবে পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয় মিলিয়ে ৪০ জনের মাথা মুড়িয়ে দেওয়ার বিধান দেওয়া হয়। এই শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়ায় ছাগল, মুরগি বলি দেওয়া হয়। ভোজ খাওয়াতে হয় গোটা গ্রামকে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে এই কথা প্রকাশ হওয়ার পরেই নিন্দার ঝড় উঠেছে।
ওই ছবিতে দেখা যায়, গ্রামের একটি মাঠে মাথা মুড়িয়ে বসে আছেন পুরুষরা। আর এক পাশে বসিয়ে রাখা হয়েছে মহিলাদের।
এর পরেই গ্রামে একটি প্রতিনিধি দল পাঠান এলাকার পুলিশ। তিনি জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন প্রশাসনের দায়িত্বশীলরা।
যদিও, পরিবারের সদস্যদের দাবি, এই নিয়ে কেউ তাদের জোর করেনি। স্বেচ্ছায় শুদ্ধিকরণে অংশ নেন তারা।
সূত্র: ডেইলি জং ও এই সময়।
এআইএল/