ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার ভয়াবহ সংঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতেই ইরানজুড়ে শুরু হয়েছে বিজয় উৎসব। রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে জনগণ উল্লাসে মেতে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে বিজয়ের আবহ—উচ্ছ্বসিত টুইট ও ভিডিও।
ইরানের উপ-রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ রেজা আরেফ বলেন, ‘এই বিজয়ের মাধ্যমে ইরান শুধু সামরিক নয়, কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রমাণ করেছে যে, আমেরিকা ও পশ্চিমা শক্তির অহংকার ভেঙে দেওয়ার সক্ষমতা আমাদের আছে। এটা ইরানের প্রকৃত শক্তির বহিঃপ্রকাশ।’
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই ঘোষণার পরপরই ইরানি নেতৃত্ব একে ‘ঐতিহাসিক জয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।
ইরানের সংসদ স্পিকারের শীর্ষ সহযোগী মাহদি মোহাম্মাদি এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আজ থেকে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।’
এদিকে, ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালবান্দি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন,
“আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না। আমাদের যে সক্ষমতা রয়েছে, তা বিবেচনায় নিয়ে বলছি—এই শিল্প এগিয়ে যাবে, কেউ এটি থামাতে পারবে না।”
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধবিরতি ইরানের জন্য কৌশলগতভাবে একটি ‘সফলতা’। কারণ এতে সরাসরি সংঘাত থেকে সরে এসে দেশটি আলোচনার টেবিলে ‘শক্ত অবস্থান’ নিয়ে ফিরতে পারছে। একই সঙ্গে, দেশের ভেতরে জনগণের কাছে নিজেদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও কূটনৈতিক কৌশলের প্রভাবশালী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা চালায় ইসরাইলের অভ্যন্তরে। এরপর যুক্তরাষ্ট্র—ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়।
ইরানও চুপ থাকেনি। প্রতিক্রিয়ায় তারা কাতার ও ইরাকের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। দিন দিন উত্তেজনা চরমে উঠলে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়, যা বাস্তবায়নের পরপরই পরিস্থিতি আপাতভাবে স্থিতিশীল হয়।
হাআমা/