ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক নারী পদ্মশ্রী খেতাবপ্রাপ্ত বিতর্কিত সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজ নামে পরিচিত স্বামী প্রদীপ্তানন্দের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন।
তিনি দাবি করেছেন, ২০১৩ সাল থেকে বহুবার তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। কার্তিক মহারাজ একটি বিদ্যালয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তখন থেকে তাঁর ওপর যৌন নির্যাতন শুরু করেন।
কার্তিক মহারাজ মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সংঘের সঙ্গে যুক্ত। তবে তিনি নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, ‘আমার সম্মানহানি করতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
এ বছর কার্তিক পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছেন। এটি ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে নাবগ্রাম থানায় দায়ের করা মামলায় ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে কার্তিক মহারাজের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তখন তাকে ‘চানাক আদিবাসী আবাসিক বালিকা বিদ্যালয়’-এ চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে তাকে স্কুলের হোস্টেলে থাকতে দেওয়া হয়।
ওই নারীর অভিযোগ, ‘প্রায় প্রতিদিনই কার্তিক আমাকে স্কুল ভবনের পাঁচতলায় নিয়ে ধর্ষণ করতেন।’
ওই নারী অভিযোগ, একবার তাকে পাঁচ দিনের জন্য আশ্রমে থাকতে বলেন কার্তিক মহারাজ। সেখানেও বহুবার ধর্ষণ করেন। পরে তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন এবং প্রতি মাসে টাকা পাঠানোর আশ্বাস দেন।
ওই নারী আরও অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে কার্তিক ও স্কুলের কয়েকজন কর্মী তাকে বহরমপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে গর্ভপাত করাতে নিয়ে যান। তিনি রাজি না হলে হুমকি দেওয়া হয়। দুই কর্মীর উপস্থিতিতে এক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে তাকে জোর করে গর্ভপাত করানো হয়।
ওই নারীর দাবি, এরপরও তিনি চাকরির অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু বারবার যৌন নির্যাতনের শিকার হন।
ওই নারী অভিযোগ করেন, ‘কার্তিক আমাকে মুর্শিদাবাদের নানা আশ্রমে নিয়ে যান। সেখানেও আমি ধর্ষণের শিকার হই। আমি শুধু চাকরির আশায় চুপ ছিলাম। ধীরে ধীরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি।’
ওই নারী দাবি করেন, ১২ জুন তিনি মহারাজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি তাকে ১৩ জুন সন্ধ্যা ৭টায় বহরমপুরের একটি নির্দিষ্ট স্থানে অপেক্ষা করতে বলেন। তখন দুজন লোক এসে তাকে গাড়িতে তোলে এবং কার্তিকের সঙ্গে আর যোগাযোগ না করতে হুমকি দেয়। এরপর তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়।
এ ঘটনার কঠোর বিচার দাবি করেছেন ওই নারী।
এআইএল/