ইসরায়েলি হামলায় নিহত শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে ইরানে। শনিবার (২৮ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় রাজধানী তেহরানের ইসলামিক রেভল্যুশন স্কয়ারে (ইংলাব স্কয়ার) এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় হাজার হাজার মানুষ।
ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে জানানো হয়, জানাজায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তেহরানে জড়ো হন শোকাহত জনতা। তারা কালো পোশাকে, হাতে ইরানের জাতীয় পতাকা এবং নিহতদের ছবি নিয়ে শোক মিছিলে অংশ নেয়।
জানাজায় জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিনগুলোর ওপরে নিহত শীর্ষ কর্মকর্তাদের ইউনিফর্ম পরিহিত ছবি ছিল। জানাজার পর কফিনগুলো রাজধানীর আজাদি স্ট্রিট ধরে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয়। এই সময় উপস্থিত জনতা ‘আমেরিকার মৃত্যু হোক’ এবং ‘ইসরায়েলের মৃত্যু হোক’— এই স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি, ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রোগ্রামের প্রধান জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহ, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি এবং শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচি। এ ছাড়া নিহতদের মধ্যে চারজন নারী ও চার শিশু রয়েছেন।
গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইরান-ইসরায়েল সংঘাত চলে টানা ১২ দিন। ইসরায়েল প্রথমে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানে। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রও হামলায় যুক্ত হয় এবং ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। পাল্টা জবাবে ইরান কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
শেষ পর্যন্ত গত মঙ্গলবার একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে দুই পক্ষের সংঘাতের অবসান ঘটে। যদিও উভয় দেশই নিজেদের বিজয়ী বলে দাবি করেছে।
তবে নিহতদের জানাজায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে দেখা যায়নি। তিনি এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখনো প্রকাশ্যে আসেননি। অতীতে অনেক রাষ্ট্রীয় জানাজায় তার অংশগ্রহণ ছিল।
এটি যুদ্ধবিরতির পর নিহত শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রথম জনসমক্ষে জানাজা। এই উপলক্ষে তেহরানে সরকারি অফিসসমূহে ছুটি ঘোষণা করা হয়, যাতে কর্মচারীরা জানাজায় অংশ নিতে পারেন।
সূত্র: আল-জাজিরা, এপি
আল-জাজিরা থেকে অনুবাদ: হাসান আল মাহমুদ
হাআমা/