হাসান আল মাহমুদ >>
ইসরাইলি অবরোধের কারণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হাজারো শিশু এখন চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ইসরাইল শিশুখাদ্য তথা বেবি ফর্মুলা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করায় সেখানে শিশুরা মারাত্মক অপুষ্টি ও না খেয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে।
গত কয়েক মাস ধরে চলমান সংঘাত ও অবরোধে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বিশেষ করে নবজাতক ও দুধের শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, “শুধু খাবারের ঘাটতি নয়, বরং পরিকল্পিতভাবেই শিশুর প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে—যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।”
মানবিক বিপর্যয়
গাজার হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে দুধের শিশুদের খাবারের সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। অনেক মায়ের বুকের দুধ না থাকায় তারা নির্ভর করতেন বেবি ফর্মুলার ওপর। কিন্তু তা পাওয়া এখন প্রায় অসম্ভব।
একজন মা, যিনি গাজা শহরের একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন, কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার শিশুটি টানা দুই দিন কিছু খেতে পারেনি। দোকানগুলোতে কিছুই নেই, সাহায্যও আসে না। আমি শুধু তাকিয়ে দেখি ওর নিস্তেজ মুখ।’
এ বিষয়ে ইসরাইল দাবি করেছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে কিছু সামগ্রী গাজার প্রবেশপথে আটকে রাখা হচ্ছে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ একটি জাতিগোষ্ঠীকে দমন করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সংস্থা (UNOCHA) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘খাদ্য, পানি, ওষুধসহ শিশুদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী গাজায় প্রবেশ করতে না দেওয়ার নীতিটি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইতোমধ্যে বিশ্বের নানা প্রান্তে মানবাধিকার সংগঠন, চিকিৎসা সংস্থা ও সাধারণ মানুষ এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় #LetBabiesLive, #OpenGaza, #StopStarvingGaza হ্যাশট্যাগে লক্ষাধিক মানুষ গাজার শিশুদের জন্য সহানুভূতি ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘এটি আর শুধু একটি যুদ্ধ নয়, বরং একটি মানবিক সংকট। যখন শিশুদের মুখে দুধ না পৌঁছায়, তখন তা কেবল যুদ্ধের অংশ থাকে না, এটি নৃশংসতা হয়ে ওঠে।’
-আলজাজিরা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে অনুবাদ
হাআমা/