এরদোয়ানের বিশাল সাফল্য, ইরাকে পিকেকে যোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণ

by amirulislamluqman20@gmail.com

আমিরুল ইসলাম লুকমান >>

তুরস্কের সঙ্গে দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসানে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিতে যাচ্ছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের সুলাইমানিয়ার কাছে এক প্রতীকী অনুষ্ঠানে দলটির যোদ্ধারা শুক্রবার অস্ত্র সমর্পণ কার্যক্রম শুরু করেছে।

বিজ্ঞাপন
banner

শুক্রবার (১১ জুলাই) আল জাজিরা সূত্রে জানা গেছে, এই অনুষ্ঠানটিকে পিকেকে-র সশস্ত্র বিদ্রোহ থেকে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে রূপান্তরের একটি মোড়বদলের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ১৯৮৪ সাল থেকে চলা এই সংঘাতে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

দলটির প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ ওজালান গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের ইমরালি দ্বীপের কারাগার থেকে এক বার্তায় অস্ত্র পরিহারের আহ্বান জানান। এরপর ১ মার্চ পিকেকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়। ১২ মে দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের বিলুপ্ত ঘোষণা করে।

গত এক দশকে পিকেকে-র বেশিরভাগ যোদ্ধা ইরাকের উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছে, যেখানে তুরস্ক গত ২৫ বছর ধরে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে।

এই সপ্তাহের শুরুতে পিকেকে-র এক মুখপাত্র জানান, প্রায় ৩০ জন যোদ্ধা প্রতীকীভাবে তাদের অস্ত্র ভেঙে ফেলবে বা আগুনে পুড়িয়ে দেবে এবং পরে তারা পাহাড়ে ফিরে যাবে। এর মধ্য দিয়ে দলের পক্ষ থেকে সদিচ্ছার বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সুলাইমানিয়ায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে তুরস্কের বৃহৎ রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্য, বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিনিধি এবং বেসরকারি সংগঠনের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘অস্ত্র পরিহারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হলে শান্তি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে।’

তুরস্কের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘এই পদক্ষেপ একটি অপরিবর্তনীয় মোড়, সন্ত্রাসমুক্ত ভবিষ্যতের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।’

এদিকে ইরাকি নিরাপত্তা সূত্র জানায়, সম্পূর্ণ অস্ত্রসমর্পণ প্রক্রিয়া ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ হবে এবং তখন তুরস্কে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, তুরস্কের প্রায় ৮৫ মিলিয়ন জনগণের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ কুর্দি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পিকেকে-র এই সিদ্ধান্ত কুর্দিদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের পথে নতুন দ্বার খুলতে পারে।

পিকেকে প্রতিষ্ঠাতা ও কারাবন্দি নেতা ওজালান তার সাম্প্রতিক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমরা যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তা বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে সশস্ত্র লড়াই স্বেচ্ছায় শেষ হয় এবং গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা যায়।’

আশা করা যাচ্ছে, অস্ত্র সমর্পণের এই প্রতীকী শুরু যদি বাস্তব রূপ নেয়, তাহলে এটি হতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘতম এক সশস্ত্র সংঘাতের শান্তিপূর্ণ অবসান।

সূত্র: আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি।

এআইএল/

 

banner

এ জাতীয় আরো সংবাদ

প্রকাশক: আবু সায়েম খালেদ
পরিচালক: এইচ. এম. মুহিউদ্দিন খান
আসকান টাওয়ার, ৬ষ্ঠ তলা, ১৭৪ ধোলাইপাড়
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪
ইমেইল: info@36news24.com
ফোন: 01401 400222