পাকিস্তানে চলমান মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যায় ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ সরকারি তথ্যে দেখা যাচ্ছে, এই দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ১০৪ জনে।
গত ২৬ জুন থেকে পাকিস্তানে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে দেশজুড়ে বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাত এবং হঠাৎ বন্যার ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্যোগে ঘরবাড়ি, ফসলের জমি, রাস্তা ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাহাড়ি ও উত্তরের অঞ্চলগুলো।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, ফলে মোট মৃতের সংখ্যা ১০৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঞ্জাব প্রদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রদেশটিতে মোট ৩৯ জন নিহত ও ১০৩ জন আহত হয়েছেন। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সর্বশেষ ১ জনের মৃত্যুতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১-এ, আহত হয়েছেন ৫১ জন। বেলুচিস্তানে শনিবার মারা গেছেন ৩ জন এবং মোট মৃতের সংখ্যা ১৬, আহত ৪ জন। সিন্ধু প্রদেশে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন আরও ৩৭ জন। আজাদ জম্মু ও কাশ্মিরে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১ জনের এবং আহত হয়েছেন ৫ জন।
এনডিএমএ ও স্থানীয় প্রশাসনের মতে, পাহাড়ি অঞ্চলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গ্রামীণ জনপদগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অসংখ্য বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং অনেক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এসব এলাকায় জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
বন্যার কারণে দেশের খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বহু কৃষিজমি পানিতে ডুবে গেছে, ফলে ফসল উৎপাদনে বড় ধরনের ঘাটতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: আনাদোলু এজেন্সি।
এআইএল/