উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনার পর, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যে একটি স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে।
মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক ২টার কিছু পর স্ট্যাটাসটি প্রকাশ করা হয়। সেখানে লেখা ছিল, ‘মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যারা অর্থ সাহায্য করতে চান, তারা প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলের নির্দিষ্ট ব্যাংক নম্বরে সহায়তা পাঠাতে পারেন।’
পোস্টটিতে সেই তহবিলের হিসাব নম্বরসহ প্রয়োজনীয় ব্যাংক তথ্যও সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো—পোস্টটি প্রকাশের মাত্র ৩০ মিনিট পরই তা সরিয়ে ফেলা হয়। বর্তমানে ফেসবুক পেজটিতে আর সেটি দেখা যাচ্ছে না।
এই আচরণ নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা না এলেও, সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা ও কটাক্ষ। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, সরকারের দায়বদ্ধতা ও সংকট ব্যবস্থাপনার বিষয়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ সরাসরি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ভাষাগত তীব্রতায়।
নকীব মাহমুদ নামে একজন লেখেন, “শুয়োরদের লজ্জা নেই! আসছে ভিক্ষা চাইতে!”
আশরাফ আকবার চৌধুরী মন্তব্য করেন, “এনজিও সরকার বলে কথা।”
আব্দুস সামাদ আজিজ নামে একজন লিখেন, ‘পোস্টটা ডিলিট করে ফেলল! টাকা পাঠানোর সুযোগও পেলাম না! এই আফসোস থেকে যাবে!’
জুবায়ের বিন ফরিদ নামে একজন লিখেছেন, ‘পর্যাপ্ত অনুদান আসার পর পোস্টটি ডিলিট করা হয়েছে।”
আব্দুস সামাদ আমিন নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘আগে সরকারকে ভয় পেত আর এখন সরকার নিজেই ভয় পায়। আগাগোড়া পশ্চিমার একদম অর্জিনাল, জেনুইন,ও খাঁটি মাল। পতিতার জন্য বাজেট হয়, দগ্ধদের জন্য নয়। বাহ!বাংলাদেশ! বাহ!!!!
মুহাম্মাদ আলিফ নামে একজন নেটিজেন মন্তব্য করেন, ‘আগে ‘সরকারের ভয়ে’ মানুষ পোস্ট ডিলিট করতো আর এখন ‘মানুষের ভয়ে’ সরকার পোস্ট ডিলিট করে!’
অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—যদি সত্যিই সাধারণ মানুষের সহায়তার প্রয়োজন থাকে, তাহলে পোস্টটি মুছে ফেলা হলো কেন? আর যদি সহায়তা চাওয়ার প্রয়োজন না-ই থাকতো, তাহলে এমন পোস্ট দেওয়া হলো কেন?
নানা মহলে ধারণা করা হচ্ছে, বিতর্কের আশঙ্কায় কিংবা ‘অপ্রস্তুতভাবে’ পোস্টটি দেওয়া হয়েছিল, যা পরে কর্তৃপক্ষ মুছে ফেলেছে। তবে এর ফলে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে সরকারের সংকটকালীন বার্তাপ্রবাহ এবং দায়বদ্ধতার ধরন।
হাআমা/