জুলাই সনদের খসড়া নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ। আজ মঙ্গলবার দলের নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, “খসড়া পড়ে এটিকে পতিত স্বৈরাচারের প্রতি নমনীয় এবং আইনী বাধ্যবাধকতাহীন দুর্বল একটি সনদ বলে মনে হয়েছে।”
মাওলানা ইউনুস অভিযোগ করেন, “খসড়ায় একবারের জন্যও পতিত ফ্যাসিবাদের মূল হোতা শেখ হাসিনার নাম উচ্চারণ করা হয়নি। অথচ তিনিই গত দেড় দশক ধরে দেশে রক্তাক্ত শাসন চালিয়েছেন। সাম্প্রতিক ফোনালাপে তার সরাসরি হত্যার নির্দেশও প্রমাণিত হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে তাঁর নাম না থাকাটা রাজনৈতিক সত্যের সঙ্গে প্রতারণা।”
তিনি বলেন, “জুলাই সনদের মূল দাবি ছিলো এর আইনী বৈধতা ও বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা। কিন্তু খসড়ায় এ বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। বরং ‘যথাযোগ্য স্বীকৃতি’র মতো আপেক্ষিক শব্দ ব্যবহার করে সনদের অর্থকে অস্পষ্ট রাখা হয়েছে। বাস্তবতা হলো—জুলাইয়ের ইতিহাস রক্তে লেখা, এটি আপেক্ষিক নয়।”
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব আরও অভিযোগ করেন, “খসড়ায় মাদরাসা ছাত্রদের কোনো স্বীকৃতি নেই, অংশগ্রহণকারী শক্তিগুলোর নামও নেই, এমনকি ফ্যাসিবাদের দোসরদের নাম না থাকায় তাদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ থেকেই যাচ্ছে।”
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “বাংলাদেশ যে দীর্ঘ দেড় দশক ধরে স্বৈরতন্ত্রের চাপে পিষ্ট হয়েছে, তার পেছনে ভারতের বড় ভূমিকা রয়েছে। অথচ খসড়ায় ভারতের ভূমিকা নিয়ে রহস্যজনক নীরবতা রাখা হয়েছে।”
মাওলানা ইউনুস আহমদের ভাষায়, “এই খসড়া সনদে প্রয়োজনীয় আইনী কাঠামো, অপরাধীদের চিহ্নিতকরণ, অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা এবং রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উপেক্ষিত। ফলে এটি একটি দুর্বল ও বিভ্রান্তিকর দলিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ
আজকের সাপ্তাহিক বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ুম, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুফতী কেফায়েতুল্লাহ কাশফী,
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী আতিকুর রহমান মুজাহিদসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের দায়িত্বশীলরা।
হাআমা/