পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ফের উত্তাপ ছড়িয়েছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে ঘিরে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এই স্লোগানকে বাংলাদেশের বলে দাবি করে সরাসরি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিধানসভা চত্বরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, “জয় বাংলা ভারতের স্লোগান নয়, এটি বাংলাদেশের। বাংলাদেশের স্লোগান ভারতে চলবে না।”
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি ও জনসভায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ব্যবহার করে আসছে। তবে এই স্লোগান নিয়ে বিরোধীদের আপত্তি নতুন নয়। সর্বশেষ বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে বুধবার, যখন শুভেন্দু অধিকারীর গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে এক তৃণমূল কর্মী ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শুভেন্দু ওই কর্মীর সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং রক্ষীদের তাকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয় যখন শুভেন্দু অধিকারী ওই কর্মীর মুখোমুখি হয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেন। পাল্টা জবাবে সেই তৃণমূল কর্মী ফের ‘জয় বাংলা’ বলেন। উত্তেজনার মধ্যে শুভেন্দু অধিকারী তাকে ‘রোহিঙ্গা’ বলে কটাক্ষ করলে, ওই কর্মী পাল্টা বলেন, “আপনিই রোহিঙ্গা”।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। বিজেপির পক্ষ থেকে জোরালোভাবে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তোলা হচ্ছে, যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস এখনও ‘জয় বাংলা’-কে নিজেদের সাংস্কৃতিক পরিচয় হিসেবে তুলে ধরছে। ফলে রাজ্য রাজনীতিতে ফের মেরুকরণ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, “ভারত মাতা কি জয় বলুন। আপনি যদি হিন্দু হন, তাহলে ‘জয় শ্রীরাম’ বলুন। মুসলমানদের ‘জয় শ্রীরাম’ বলার দরকার নেই।” একইসঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর বিরুদ্ধে হিন্দুবিরোধী আচরণের অভিযোগ তোলেন। বলেন, “দিঘায় একটি ধর্মীয় মিছিলের জন্য হাইকোর্টের অনুমতি নিতে হয়েছে। হিন্দুদের ধর্মাচরণের ওপর বাধা সৃষ্টি করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে রাজ্যে ‘স্লোগান বনাম স্লোগান’-এর লড়াই তীব্রতর হবে। ধর্মীয় পরিচয় ও জাতীয়তাবাদকে ঘিরেই রাজনীতি এখন আরও সংবেদনশীল হয়ে উঠছে।
হাআমা/