চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি কক্ষ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৪ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে নগরীর কাজির দেউড়ির মোড়সংলগ্ন ক্লাবটির ৩০৮ নম্বর কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, রোববার বিকেল ৫টার দিকে হারুন-অর-রশিদ চট্টগ্রাম ক্লাবে ওঠেন। সকালে ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার সাড়া না পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে তার লাশ উদ্ধার করে। তার লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
১৯৭০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি পদাতিক কোরে কমিশন লাভ করেন। তবে শুরুতে ইঞ্জিনিয়ার কোরে যেতে চাইলেও কোম্পানি কমান্ডারের পরামর্শে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সেনা ক্যারিয়ারে তিনি কুমিল্লার ৪র্থ ইবিআর-এ প্রথম পোস্টিং পান।
পরবর্তীতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে তিনি জর্জিয়ায় বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাবাহিনীতে তিনি অ্যাকাডেমিক মনোভাবের জন্য পরিচিত ছিলেন। আর্মি স্টাফ কলেজ এবং পদাতিক ও কৌশল স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন।
২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদেশি সার্ভেয়ার অপহরণের সময় তিনি সেনাপ্রধান ছিলেন। অবসরের পর তিনি সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সহ-সভাপতি হন।
পরে ডেসটিনি গ্রুপের সভাপতি হিসেবে যুক্ত হন হারুন-অর-রশিদ। ডেসটিনির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক জালিয়াতির অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। পরে অসুস্থতা ও বয়সের কারণে জামিনে মুক্তি পান তিনি। ডেসটিনি সংক্রান্ত ২০২৩ সালের একটি মামলায় হাজিরা দিতে তিনি চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন বলেন, সকালে খবর পেয়েছি, তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা শোকাহত।
সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় তিনি আর্মি গলফ ক্লাবের প্রথম সভাপতি হন। ২০১৫ সালে এক আলোচনায় তিনি পাকিস্তানকে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেন।
সাবেক এই সেনাপ্রধানের মৃত্যুতে সেনাবাহিনী, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, মুক্তিযোদ্ধা সম্প্রদায় ও বিভিন্ন মহল শোক প্রকাশ করেছে।
এআইএল/