গণমাধ্যমের ওপর চাপ শুধু সরকার, মালিকপক্ষ বা সম্পাদকীয় স্তর থেকেই নয়—এর বাইরেও একটি ‘সামাজিক শক্তি’ সক্রিয় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
আলী রীয়াজ বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকার থেকে গণতান্ত্রিক ধারায় রূপান্তরের সময় এ ধরনের শক্তি তৈরি হয়। দেশে যা ঘটছে, সেটি সে অর্থেই বিবেচনা করেন তিনি।
আজ বুধবার (৬ আগষ্ট ) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: অভিযোগ নিষ্পত্তি ও স্ব-নিয়ন্ত্রণের বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এক সংলাপ আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। সংলাপ আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বেশ কিছু বাধার কারণে তা সম্ভব হয় না। এর মধ্যে অন্যতম বাধা হিসেবে গণমাধ্যমগুলোর নিজেদের করপোরেট স্বার্থ অনুসরণ না করাকে দায়ী করেন তিনি।
অধিকাংশ মিডিয়া হাউস (গণমাধ্যমের পরিচালক প্রতিষ্ঠান) এখন তাদের অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্যের নিরাপত্তার জন্য মিডিয়াকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে উল্লেখ করে অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, যতদিন এই বাস্তবতা থাকবে, ততদিন প্রকৃত অর্থে স্বাধীন সাংবাদিকতা সম্ভব নয়।
সংলাপে আলী রীয়াজ বলেন, সারা বিশ্বেই কর্তৃত্ববাদী শাসন থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের সময় নতুন সামাজিক শক্তিগুলোর উদ্ভব ঘটে, তারা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে এবং কখনো কখনো তা ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নেয়। দেশেও তার কিছু প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
তবে এ ধরনের ঘটনায় যে পরিমাণ সহিংসতা হয়, বাংলাদেশে তা হয়নি বলে মনে করেন আলী রীয়াজ। এ জন্য রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ধন্যবাদ দেওয়া দরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকারও চেষ্টা করেছে, যদিও আরও বেশি করা যেত।
সংলাপে আরও বক্তব্য দেন মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর (পাভেল), জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক আসিফ বিন আলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের সভাপতি জিল্লুর রহমান।
এনআর/