হাসান আল মাহমুদ >>
নীলা ইসরাফিল নামের এক নারীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক অঙ্গনে তিক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। যদিও তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র কেন্দ্রীয় সদস্য নন, তবুও নিজেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দাবি করে দলের অভ্যন্তরে বিভ্রান্তি ও বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন। বিশেষ করে এনসিপি নেতা তুষার সারোয়ারকে নিয়ে তার নানা সমালোচনা ও বিতর্কিত মন্তব্য রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
সম্প্রতি নীলা ইসরাফিল একটি উদ্ভট দাবি তুলে বলেন, জুলাই মাসে যারা নিহত হয়েছে, তাদেরকে হাসিনা ও তার পুলিশ বাহিনী মেরেছে নাকি হুজুররা নিজেই মানুষ হত্যা করে হাসিনা ও পুলিশের ওপর দায় চাপিয়ে সাধারণ মানুষকে মানসিকভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে—এই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি এবং বিষয়টি অনেকটা ঘোলাটে বলে মন্তব্য করেন।
জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী লেখক ও গবেষক আব্দুল্লাহ আল মাসউদ বলেন, “মানুষের চিন্তার স্তর এত নিম্নমানের হলে এমন দাবি করা যায়! এটি এখন পাগলের প্রলাপ মনে হলেও, সময়ের সঙ্গে এরা এসব প্রলাপকে ন্যারেটিভ হিসেবে গড়ে তুলবে এবং অনেকেই এদের কথায় ভ্রান্ত হবেন। এই নারী ইতিমধ্যেই যথেষ্ট লাঞ্চিত হয়েছে, আল্লাহ তাকে আরও লাঞ্চিত করুন—এই দোয়া করি।”
এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য আশরাফ উদ্দিন মাহদী স্পষ্ট করেন, নীলা ইসরাফিল কখনো এনসিপির কেন্দ্রীয় বা থানা কমিটির কোনো সদস্য ছিলেন না। বিষয়টি এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনও নিশ্চিত করেছেন। নীলা নিজের রাজনৈতিক পরিচয় গড়ার জন্য এমন দাবি করেছেন, যা মূলত নিজের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা বলে ধরা হচ্ছে।
নীলা ইসরাফিলের বিতর্কিত বক্তব্যের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া মাদরাসা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তার অবমাননাকর ও ভিত্তিহীন অপবাদ। তিনি অভিযোগ করেছেন, “হেফাজত মোল্লারা জুলাই-আগস্টে মানুষ হত্যায় জড়িত থাকতে পারে” এবং বলেছেন, “হুজুররা এ আন্দোলনে ছিল কিনা তা জানার আগে আমরা অংশগ্রহণ করতাম না।”
এই বক্তব্যগুলোকে আইনত ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। হেফাজত ইসলাম তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি, আলেম সমাজের একজন নেতা মাওলানা আতাউর রহমান বিক্রমপুরী নিজে বাদী হয়ে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে জানান, আলেম সমাজের বিরুদ্ধে নোংরা, কুরুচিপূর্ণ ও অপবাদ মূলক বক্তব্য দেওয়ায় নীলা ইসরাফিলের বিরুদ্ধে আমি নিজে বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
হাআমা/