নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীকে খুশি করতে ও রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। ফলে এটি অসম্পূর্ণ ও আপসকামী হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
সোমবার (১১ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জুলাই ঘোষণাপত্রে উপেক্ষিত ১৯৪৭ এর ইতিহাস, পিলখানা ট্র্যাজেডি, শাপলার গণহত্যা এবং ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ইতিহাস অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আয়োজিত যৌথ এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন বক্তারা।
যৌথ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিডিআর কল্যাণ পরিষদ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন (নিসআ) ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন।
গণঅধিকার পরিষদ মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, এই ঘোষণাপত্র দেখে মনে হচ্ছে কোনো একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে সামনে রেখে এটি প্রণয়ন করেছে। আমরা এমন ঘোষণাপত্র চাইনি, যেখানে জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। এই ঘোষণাপত্রে আমাদের জাতিসত্তার যে ইতিহাস, এই বাংলাদেশের যে ইতিহাস, ইতিহাসের পরতে পরতে জনগণের যে অংশগ্রহণ, সেটি আমরা লক্ষ্য করিনি।
তিনি আরও বলেন, এই ঘোষণাপত্রে ৪৭’ নেই ৭১’ আছে কিন্তু সেটাও একপেশে। ২০০৯ সালের পিলখানার নারকীয় হত্যাকাণ্ড উল্লেখ নেই, যে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে ভারতীয় পরিকল্পনায় তারা প্রতিষ্ঠা করেছিল। ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের উপরে যে তাণ্ডব, এই তাণ্ডব তারা উল্লেখ করেননি।
বিডিআর কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ফয়জুল আলম বলেন, এখন পর্যন্ত এই সরকারের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী দোসরেরা ঘাপটি মেরে বসে আছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এই ঘোষণাপত্রে হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড, কোটা আন্দোলন এবং নিরাপদ নিরাপদ সড়ক আন্দোলন অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি আবদুল্লাহ মেহেদী দীপ্ত বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র পরিণত হয়েছে একটি অসম্পূর্ণ ও আপসকামী দলিলে। ইতিহাস বিবর্জিত এই দলিলকে আমরা একটি প্রতারণা আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করতে চাইছি। ২০১৮ সালের আন্দোলনের পরে তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা, রাজনৈতিক বোধে পরিবর্তন আসে। দেখেছি ১৮’ সাল পরবর্তীতে প্রত্যেকটা আন্দোলনে প্রত্যেকটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের তরুণদের দাঁড়াতে। যার চূড়ান্ত ফলাফল হচ্ছে ২৪’ এর গণঅভ্যুত্থান। অথচ এটি ঘোষণাপত্রে নেই।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক বলেন, জুলাই সনদে ভারতের ইন্ধন রয়েছে। উপদেষ্টাদের অনেকের মধ্যেই জুলাইয়ের চেতনা নাই। তারা জুলাই বিপ্লবকে স্বীকার করতে চান না। শাপলা চত্বরের গণহত্যার ইতিহাস ঘোষণাপত্রে উল্লেখ না থাকলে আপনাদের ইতিহাসও থাকবে না। দেশের মানুষ নতুন করে আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদ মুক্ত, ভারতের দালাল মুক্ত বাংলাদেশ গড়বে।
এনআর/