প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি, যাতে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়। গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং ক্ষমতার প্রকৃত মালিক জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আজ মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউকেএম) থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণের পর বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কুয়ালালামপুরে ইউকেএম অডিটোরিয়ামে এক আনন্দঘন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও নেগেরি সেমবিলান দারুল খুসুস রাজ্যের সুলতান তুংকু মুহরিজ ইবনি আলমারহুম তুংকু মুনাওয়িরের কাছ থেকে তিনি এই সনদ গ্রহণ করেন। সামাজিক ব্যবসা প্রসারে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
ড. ইউনূস বলেন, এই স্বীকৃতি তাকে তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণে দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। গত বছর বাংলাদেশের বহু তরুণ সাহসিকতার সঙ্গে একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল এবং শত শত ছাত্র-যুবক জীবন উৎসর্গ করেছে একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য—যেখানে মর্যাদা, স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে তরুণদের নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থান দেশের জাতীয় পরিচয় ও ভবিষ্যৎ আশার নতুন অর্থ তৈরি করেছে। বর্তমানে সরকার একটি ন্যায়সঙ্গত শাসনব্যবস্থা, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি এবং সমান সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার কার্যক্রম তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, যার লক্ষ্য সুস্পষ্ট পরিকল্পনা, দৃঢ় প্রত্যয় এবং বিস্তৃত উন্নয়ন রোডম্যাপ বাস্তবায়ন। উদ্যোক্তাদের সহায়তা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে বেশি বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতাকে তিনি অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মূল চাবিকাঠি হিসেবে উল্লেখ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, “তোমরা আগামী দিনের নির্মাতা। প্রকৃত সাফল্য কেবল নিজের জন্য নয়—বরং অন্যদেরও উন্নতির পথে নিয়ে যাওয়াই বড় অর্জন। পৃথিবীকে বদলাতে বড় স্বপ্ন দেখো, সাহসীভাবে ভাবো এবং সেই অনুযায়ী কাজ করো। প্রত্যেক ব্যর্থতাকে সাফল্যের পথে একটি ধাপ হিসেবে নাও।”
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীকে বদলে দিতে প্রকৃত নেতা ও সমস্যা সমাধানকারীর প্রয়োজন, এবং প্রত্যেকের মধ্যেই অসাধারণ কিছু করার ক্ষমতা রয়েছে—হোক তা মানুষের সেবায় ব্যবসা গড়া, নতুন ধারণা সৃষ্টি, কিংবা এমন নীতি প্রণয়ন যা একটি সম্প্রদায়কে উন্নতির পথে নিয়ে যাবে।
হাআমা/