শবে মেরাজ ইতিহাসে এক বিশেষ রাত। রাসূলুল্লাহ সা. এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সা. ছাড়া অন্য কোনো নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি। আর এ কারণেই তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নবী।
শরিয়তের পরিভাষায় মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত সফরকে ‘ইসরা’ এবং মসজিদুল আকসা থেকে সাত আসমান পেরিয়ে আরশে আজিম সফরকে ‘মেরাজ’ বলা হয়।
এই রাতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সপ্তম আকাশে ভ্রমণ করেন। সেখানে তিনি মহান আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করেন। রাতের শুরুতে ফেরেশতা জিবরাইল আলাইহিস সালাম মহানবীকে সা. কে জাগিয়ে তোলেন। তাঁর বাহন ছিল বোরাক নামের একটি বিশেষ প্রাণী। বোরাক খুব দ্রুত চলতে পারত। প্রথমে তিনি মক্কা থেকে বাইতুল মাকদাসে যান। সেখানে তিনি আগের নবীদের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন।
এরপর মহানবী সা. আকাশের দিকে রওনা হন। তিনি এক এক করে সাতটি আকাশ পার হন। প্রতিটি আকাশে বিভিন্ন নবীর আ. এর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। সপ্তম আকাশে তিনি ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সাথে দেখা করেন।
এরপর তিনি সিদরাতুল মুনতাহা পৌঁছান। এটি সৃষ্টির শেষ সীমা। মহানবী সা. আল্লাহর কাছে যান। আল্লাহ প্রথমে ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেন। পরে মুসা আলাইহিস সালামের পরামর্শে তা কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্তে আনা হয়।
এই ভ্রমণে মহানবী সা. জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখেন। এরপর তিনি বোরাকের পিঠে চড়ে আবার মক্কায় ফিরে আসেন।
পরদিন তিনি এই ঘটনা সবাইকে জানান। মক্কার মুশরিকরা তাকে পাগল বলে উপহাস করে। তবে, নবীজির বন্ধু আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাকে বিশ্বাস করেন।
শবে মেরাজ ছিল মানব ইতিহাসের প্রথম মহাকাশ ভ্রমণ। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন পৃথিবীর প্রথম নভোচারী।
এনএ/