আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ফিলিস্তিনি জনগণকে গাজা থেকে জর্ডান ও মিশরে জোরপূর্বক স্থানান্তরের মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ঐক্যবদ্ধভাবে বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমি থেকে উচ্ছেদ করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সৌদি সংবাদ মাধ্যম আল-আরাবিয়া জানিয়েছে, শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) কয়রোতে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মিশর, জর্ডান, সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফিলিস্তিন, অন্যান্য আরব দেশসহ আরব লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। পরে তারা এক যৌথ বিবৃতিতে উক্ত ঘোষণা দেন।
আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সর্বসম্মত বিবৃতিতে বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে এমন যেকোনো প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করছি, যা ফিলিস্তিনিদের অধিকার হরণ করে। চাই সে অধিকার হরণ বসতি স্থাপন, ভূমি দখল বা ফিলিস্তিনি ভূখ- সংযুক্ত করার মাধ্যমে হোক না কেন। আমরা প্রকৃত ও ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনি মালিকদের থেকে তাদের জমি জবরদস্তিমূলক খালি করার যেকোনো অপচেষ্টাকে অযৌক্তিক মনে করি এবং তা প্রত্যাখ্যান করি। তারা আরো বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদমূলক যেকোনো পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা বিঘ্ন করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আরো জানান, তারা প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক, যেন মধ্যপ্রাচ্যে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের মাধ্যমে একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এ বৈঠক মার্কিন প্রেসিডেন্টের ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ ঘোষণার প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য ডাকা হয়েছিল। এ বিষয়ে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ সিসি বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, মিশর গাজার জনগণের স্থানান্তরের জন্য কোনো সুযোগ সুবিধা দেবে না। তিনি আরো বলেন, গাজা এ নিয়ে এলাকাভিত্তিক প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার শপথ নেওয়ার প্রথম সপ্তাহেই এই পরিকল্পনা উত্থাপন করেছিলেন, যার লক্ষ্য ছিল গাজাকে ফিলিস্তিনিদের থেকে খালি করে ১০ লাখ লোককে জর্ডান ও মিশরে স্থানান্তর করা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার পরিকল্পনায় উল্লেখ করেছিলেন, স্থানান্তর স্থায়ী হতে পারে আবার অস্থায়ীও হতে পারে। তিনি একাধিকবার কঠোরভাবে তার অবস্থান প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, মিশর ও জর্ডান এটি বাস্তবায়ন করবে।
উল্লেখ্য, মিশর ও জর্ডানে ইতোমধ্যে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বসবাস করছেন। ইসরাইলি বর্বরতার শিকার হয়ে তারা নিজেদের জন্মভূমি থেকে উৎখাত হয়ে এখন বিভিন্ন দেশে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সূত্র: আল-আরাবিয়া
ভাষান্তর: আমিরুল ইসলাম লুকমান