গুলি-গ্রেনেডের আওয়াজ। টিয়ারশেলের বিষাক্ত ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে চারপাশ। এর মধ্যে দিয়ে মুখে মাস্ক পরে সম্মুখসারীর যোদ্ধাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলছে পাঞ্জাবি গায়ে, দাড়ি-টুপিওয়ালা এক বাবরী চুলের যুবক। পুলিশের ছররা গুলি আর টিয়ার শেলের তীব্রতায় কখনো পিছিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে আবার কখনো সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ফেরার সময় কাধে করে নিয়ে আসছে আহত কোনো রক্তাক্ত যোদ্ধাকে।
বলছিলাম জুলাই বিপ্লবের দিনলিপি বইয়ের লেখক মুনতাসির বিল্লাহর কথা। তার কলমে উঠে এসেছে যাত্রাবাড়ীর আন্দোলনের ভয়াবহ চিত্র। একাধারে তিনি সহযোদ্ধাদের সাথে যেমন বিপ্লবের দিনগুলোতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন, তেমন কলম হাতে তুলে এনেছেন ইতিহাসের অজানা অধ্যায়। যা কোনো ক্যামেরায় উঠে আসে নি।
সেই বিপ্লবের দিনগুলোতে তিনি দেখেছেন, পাশে লাশ রেখে ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের কান্না, সন্ধ্যা হয়ে গেলেও আন্দোলন থেকে সন্তান ফিরে না আসায় মায়ের কান্না, চোখের সামনে গুলিবিদ্ধ হতে দেখেছেন কতজনকে, ফ্যাসিস্ট বাহিনীর আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে পাখির মতো গুলি করা দেখেছেন, গুলিবিদ্ধ লাশ দেখেছেন, হাত রক্তাক্ত করেছেন শহিদ আর আহদের লাশে, নিজে আহত হয়েছেন, আবার কখনো হাসপাতালে দৌড়িয়েছেন আহত যোদ্ধাদের নিয়ে। তিনি যেন যাত্রাবাড়ীর মৃত্যুপুরী থেকে বেঁচে ফেরা এক ফিনিক্স পাখি। যে ভাগ্রক্রমে বেঁচে ফিরেছেন।
বেঁচে ফিরে সেই রক্তাক্ত হাতে কলম ধরে সুনিপুণভাবে তুলে এনেছেন বিল্পবের সময়ে যাত্রাবাড়ীর সেই ভয়াবহ দিনগুলোর কথা। সময়ের কথা। মোট কথা, জুলাই বিপ্লবের দিনলিপি লেখকের বর্ণনা করা এক জীবন্ত থ্রিলার। যেখানে নেই কোনো কাল্পনিককতা। পাঠক পড়তে গিয়ে বারবার ভয়াবহ সেই উত্থাল দিনে চলে যাবেন। গা শিহরিয়ে উঠবে। কখনো-বা উৎকণ্ঠায় গলা শুকিয়ে যাবে। মনে হবে আপনিই আন্দোলনের সম্মুখসাররিতে থেকে সব দেখছেন। এই বুঝি গুলি লাগল বা পাশে গ্রেনেড এসে পড়ল।
জুলাই বিপ্লবের দিনলিপি প্রকাশ করেছে সৃজনশীল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রবিন্দু। বইমেলায় কেন্দ্রবিন্দুর ৫৩৮-৫৪০ নম্বর স্টলে পাবেন জুলাই বিপ্লবের দিনলিপি। ইতিহাস জানার জন্য সংরক্ষণের জন্য বই কিনুন। অন্যকে কেনার জন্য উৎসাহিত করুন। ধন্যবাদ।
বই : জুলাই বিপ্লবের দিনলিপি
লেখক : মুনতাসির বিল্লাহ
প্রকাশক : কেন্দ্রবিন্দু
প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা-২৫
এএ/