|| আদিয়াত হাসান ||
শেষ হলো চরমোনাইয়ের ঐতিহাসিক ফাল্গুনের মাহফিল। ৩দিনব্যাপী এ মাহফিল গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হয় আজ ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল সাড়ে আটটায়। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
অন্যান্য বারের চেয়ে এবারের চরমোনাই মাহফিলটি ছিলো একটু ভিন্ন। মাহফিলের বিশেষ আয়োজন ‘ওলামা সম্মেলন’-এ উপস্থিত ছিলেন দেশ-বিদেশের প্রথিতযশা আলেমরা। এছাড়া এ বছর মাহফিলে মূল ৭টি বয়ানের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করেন বাংলাদেশসহ সৌদিআরব, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিশর, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও তুরস্কের বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম।
চরমোনাই মাহফিলে এবার বাড়তি আলো ছড়ায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির, শাইখুল হাদিস ইবনে শাইখুল হাদিস মাওলানা মামুনুল হকের উপস্থিতি। বিষয়টি দেশের ইসলাম প্রেমীদের মাঝে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছায়। ইসলামী রাজনীতির ময়দানে ঐক্যের আগমনী বার্তা ছড়ায়।
মাওলানা মামুনুল হক চরমোনাই মাহফিলে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ওলামায়ে কেরামের সামনে এক ঐতিহাসিক সুযোগ এসেছে। আর এর কারণে তাদের কাঁধে দায়িত্ব ও জিম্মাদারী এসেছে। আকাবিরদের দায়িত্বের বোঝা আমাদের ওপরে। আমরা আমাদের পূর্বসূরীদের রেখে যাওয়া একটি সুন্দর প্লাটফর্মের উপর দাঁড়িয়ে আল্লাহর দ্বীনের কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। সুতরাং আজকের জাতিকে যদি আমরা সঠিক নেতৃত্ব দিতে ব্যার্থ হই আমাদেরকে অনেক বড়ো মাশুল দিতে হবে দুনিয়াতে ও আখেরাতে।
এ সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, আমি মনে করি আমাদের অন্তরের ঐক্য হলে বৃহত্তর ঐক্য সম্ভব। ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠায় এদেশের ইসলামপন্থীদের টেকসই ঐক্যে আমরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ছাড় দিতে প্রস্তুত।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর, চরমোনাই পীর মুফতী রেজাউল করীম বলেন, আমরা ইসলাম, দেশ ও মানবতার পক্ষের শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী দিনে দেশ গড়ার কাজ করতে চাই। ইসলামের পক্ষে বৃহত্তর ঐক্যের জন্য আমাদের প্রয়াস সফল হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রসঙ্গত, এ বছর ফাল্গুনের এই মাহফিলে ৪জন অমুসলিম চরমোনাই পীর মুফতি রেজাউল করিম ও শায়েখে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করিমের হাতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। মাহফিলে আসা মুসল্লিদের মধ্যে ১০ জন বার্ধক্যজনিত ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। চরমোনাই অস্থায়ী মাহফিল হাসপাতালে এবছর প্রায় ৩ সহস্রাধিক মুসল্লি চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
এএ/