রমজান মাসে মুসলিমরা সিয়াম পালন করে, যা শুধু আত্মশুদ্ধির জন্য নয় বরং সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনেরও একটি মাধ্যম। বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম ক্রীড়াবিদরা এই সময় রোজা রেখে মাঠে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তবে রোজা রেখে খেলাটা কখনোই সহজ নয়, বিশেষত যখন আপনি একজন পেশাদার ফুটবলার। এরই মধ্যে বার্সেলোনার তরুণ সেনসেশন লামিনে ইয়ামাল এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন এবং রোজা রেখে মাঠে খেলছেন।
স্প্যানিশ সেনসেশন লামিনে ইয়ামাল
লামিনে ইয়ামাল। যার বাবা মরক্কোর এবং মা গিনির, স্পেনে জন্মগ্রহণ করা এই ফুটবলার বর্তমানে বার্সেলোনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া এই তরুণ তার ক্যারিয়ার শুরু থেকে দারুণ খ্যাতি অর্জন করেছেন।
পবিত্র রমজান মাসে ইয়ামাল তার অন্যান্য মুসলিম সহকর্মীদের মতো রোজা পালন করছেন। লা লিগা কিংবা চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে খেলতে নামা, বিশেষ করে রোজা রেখে, একটি বড় চ্যালেঞ্জ। খেলোয়াড়দের জন্য সঠিক পুষ্টি ও শক্তি বজায় রাখা প্রয়োজন, কিন্তু রোজা রেখে এইসব কিছু পরিচালনা করা একদমই সহজ কাজ নয়। তবে, ইয়ামাল তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হননি এবং মাঠে পারফরম্যান্সেও তিনি দৃষ্টিনন্দন।
গুঞ্জন: ক্লাবের বাধা?
সম্প্রতি, বিশেষ করে বেনফিকার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম লেগে ইয়ামালকে দ্রুত তুলে নেওয়ার পেছনে অনেকেই রোজা পালনকে একটি কারণ হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন। তবে স্প্যানিশ গণমাধ্যম ডিয়ারিও এএস জানিয়েছে, ইয়ামালকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল পুরোপুরি ট্যাকটিকাল কারণে।
বিশেষ ব্যবস্থা
তবে রোজা পালনের ক্ষেত্রে ইয়ামালকে কোনো প্রকার বিধি-নিষেধের মধ্যে পড়তে হচ্ছে না। ক্লাবের মেডিক্যাল বিভাগ ইয়ামালের রোজা পালনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বার্সেলোনার পুষ্টিবিদদের মাধ্যমে ইয়ামালের সাহরি এবং ইফতারের মেন্যু নির্ধারণ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে তাকে প্রয়োজনীয় শক্তি ও পুষ্টি সরবরাহ করা হচ্ছে, যাতে তিনি মাঠে তার সেরাটা দিতে পারেন।
লা মাসিয়া থেকে দাদির বাড়ি
রমজান মাসের এই বিশেষ সময়টাতে ইয়ামাল তার বার্সেলোনার নিজস্ব আবাসন প্রকল্প লা মাসিয়া ত্যাগ করে তার দাদি ফাতিমা এবং চাচা আব্দুলের বাড়িতে অবস্থান করছেন। সেখানে সঠিকভাবে ইফতার এবং সাহরি আয়োজন করা হচ্ছে, যাতে তিনি সিয়াম পালন করতে পারেন এবং একই সঙ্গে খেলায় তার সম্পূর্ণ মনোযোগ রাখতে পারেন।
ক্লাবের নজর
বার্সেলোনা ক্লাবের পক্ষ থেকেও ম্যাচের দিন ইফতারের প্রতি বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে, যাতে ইয়ামালকে মাঠে খেলতে কোনো ধরনের শারীরিক সমস্যায় পড়তে না হয়। ক্লাবের সহায়তায়, ইয়ামাল রোজা রেখে খেলায় তার সেরাটা দিতে পারছেন এবং তা সকলকে অনুপ্রাণিত করছে।
এনএ/