গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনের দায়িত্ব হামাসের হাতে অর্পণ করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইন্তিফাদা ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা জোন। এতে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনটির চুয়াডাঙ্গা জোনের সভাপতি এস এম সাইফুল ইসলাম।
শুক্রবার (২১ মার্চ) বাদ জুমা বড়বাজার গোল চত্বরে এই প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব জমায়েতে সভাপতির বক্তব্যে এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববাসীর চোখের সামনে আবারও দখলদার ইসারায়েল তার বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করে আশ্রয়কেন্দ্রে বিমান হামলা চালিয়ে শত শত নিরীহ নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে দখলদার ইহুদিবাদী শক্তি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা ও বিক্ষোভ এই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যেখানে হামাসসহ প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সরকার গঠিত হবে। তথাকথিত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান নয়, বরং ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক ভূমিতে পূর্ণ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠাই একমাত্র গ্রহণযোগ্য সমাধান।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান, দখলদার ইসারায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামরিক অভিযান পরিচালনার এখনই সময়। গত ৮০ বছর ধরে কেবল নিন্দা প্রকাশের রাজনীতি চলছে, কিন্তু বাস্তবে এর কোনো সুফল আসেনি। তাই ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করা মুসলিম বিশ্বের ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব।
এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব এডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক সম্প্রতি এক টকশোতে দখলদার ইসারায়েলের পক্ষে জনমত গঠনের উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। ২০২২ সালেও তিনি মসজিদে আকসা দখল করে সেখানে মন্দির স্থাপনের পক্ষে কথা বলেছেন। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তাকে আইনের আওতায় এনে তার বক্তব্যের পেছনে কারা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হোক।
এসময় বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন— আসুন, আমরা ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের পাশে দাঁড়াই, অর্থ ও সহযোগিতা পাঠিয়ে তাদের প্রতিরোধ সংগ্রামকে শক্তিশালী করি। একইসঙ্গে, মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করি যেন আমরা বিজয়ী ফিলিস্তিনে গিয়েও মসজিদে আকসায় নামাজ আদায় করতে পারি। গাজায় চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানাচ্ছি এবং আজকের আয়োজন সফল করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আয়োজিত বিক্ষোভ থেকে বাংলাদেশ সরকারকে ৪ দফা দাবি জানায় ইন্তিফাদা ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা জোন।
দাবিগুলো:
১. দ্রুত পাসপোর্টে “এক্সেপ্ট ইসরায়েল” পুনঃস্থাপন করে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ।
২. বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে মসজিদে আকসা ও ফিলিস্তিনের সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা।
৩. ইসরায়েলি প্রযুক্তি, বিশেষ করে স্পাইওয়ার পেগাসাসের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।
৪. ভারত-ইসরায়েল চক্রের বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের দালালদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
বিক্ষোভ পূর্ব জমায়েতে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সেক্রেটারী তুষার ইমরান সরকার, মুফতী হাবিবুর রহমান, ইন্তিফাদা ফাউন্ডেশন এর সদস্য মাওলানা শাফায়াত আদনান ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সূরাহ সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, ইসলামী ছাত্রশিবির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক বায়জিদ বোস্তামী, মেহেদী হাসান ও জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
এনএ/