বগুড়ার ধুনট উপজেলায় দুই ফ্রিল্যান্সারকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পাঁচ সদস্যসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২৩ মার্চ) রাতে শাজাহানপুর থানার বীরগ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার পুলিশ সদস্যরা হলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবিতে কর্মরত উপপরিদর্শক (এসআই) শাহীন মোহাম্মদ অনু ইসলাম, কনস্টেবল রিপন মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, মাহবুর আলম, বাশির আলী এবং মাইক্রোবাসচালক মেহেদী হাসান।
অপহরণের শিকার দুই তরুণ হলেন ধুনট উপজেলার দিগলকান্দি গ্রামের রাব্বি (১৯) ও জাহাঙ্গীর (২৪)।
ভুক্তভোগীদের পরিবার অভিযোগ করে বলে, ডিবির পুলিশ সদস্য ওহাব ওই ২ ফ্রিল্যান্সারকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করেন। ওহাবের পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেপ্তার ৬ আসামি একটি মাইক্রোবাস নিয়ে রবিবার রাত সাড়ে ১১টায় রাব্বীদের বাড়িতে যায়। ওই রাতে রাব্বী ও তার চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলম একই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলেন।
অপহরণকারীরা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ঘুমন্ত রাব্বী ও জাহাঙ্গীরকে ডেকে তুলে মাইক্রেবাসে উঠায়। এ সময় তারা রাব্বীর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও নিয়ে যায়। রাত প্রায় ২টায় অপহরণকারীরা রাব্বীর পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে রাব্বীর পরিবারের সাথে দর-কষাকষির পর ২ লাখ ও বিকাশের মাধ্যমে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে রাব্বী ও জাহাঙ্গীরকে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শেরুয়া বটতলা এলাকায় ছেড়ে দিয়ে অপহরণকারীরা মাইক্রোবাস নিয়ে রাজশাহীর দিকে রওনা হয়।
এদিকে রাব্বীর স্বজনরা পুক্তিপণের টাকা দিয়ে অপহরণকারীদের মাইক্রোবাসের পেছনে ধাওয়া দেয় এবং বগুড়া জেলা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করে। এ সময় জেলা পুলিশ ও নন্দীগ্রামের কুন্দারহাট হাইওয়ে থানা পুলিশের সহযোগীতায় বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের শাহজাহানপুর উপজেলার বীরগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মাইক্রাবাসসহ অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা, ১টি ওয়াকিটকি, ১টি হ্যান্ডকাফ ও অপহরণকারীদের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় রাব্বীর বাবা সেলিম সেখ বাদী হয়ে সোমবার বিকেল ৪টায় ধুনট থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার ৬ জনসহ পুলিশ সদস্য ওহাব আলীকে আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার পর আসামি ওহাব পলাতক রয়েছেন।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, সোমবার বিকেল ৫টায় আসামিদের থানা থেকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আসমি ওহাবকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এআইএল/