হাওরে ইজারা বন্ধ করতে হবে: উপদেষ্টা ফরিদা

by Nur Alam Khan

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, কোনো হাওরে ইজারা থাকা উচিত না। হাওরে ইজারা বন্ধ করতে হবে।

এটার ফলে কি হবে না হবে তা ভাবা যাবে না। হাওর সেখানকার মানুষের অধিকারের জায়গা, আর তা রক্ষা করাই আমাদের কাজ।

বিজ্ঞাপন
banner

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর ভেবেছিলাম মাছ নিয়ে কাজ করতে হবে। এখন মাছ তো নানা জায়গা থেকে আসে, নদী থেকে আসে, সমুদ্র থেকে আসে। কিন্তু হাওরের বিষয়টা যে এত গভীর, তা বুঝতে পারিনি। সরাসরি হাওরে গিয়ে দেখে বুঝতে পারলাম যে, হাওর বাংলাদেশের একটা সম্পদ। হাওরে শুধু মাছ আছে তাই নয়, প্রাণিসম্পদ অনেক।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) আয়োজিত ‘সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি ২০০৯: হাওর অঞ্চলে বৈষম্য ও অব্যবস্থাপন ‘ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা ফরিদা বলেন, হাওরকে ঘিরে একটা বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা হয়েছে। তাই বলা হয় যে সেখানকার ২৯ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। হাওরের মালিক মূলত কে? আসলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে হাওরগুলো রয়েছে। যদিও অধিকাংশ হাওর এলাকা ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে দিয়ে দেওয়া হয়েছে, যারা শুধু ইজারা দিয়ে এখান থেকে রাজস্ব আহরণ করে।

তিনি বলেন, এই কাজটা করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এখন হাওর রক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে যেটা নেওয়া যেতে পারে, তার মধ্যে একটি হলো বিভিন্ন এলাকাকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করা। ফলে হাওরের মাছগুলো রক্ষা পায়। এতে করে বিলুপ্ত হওয়া মাছগুলোও ফিরে আসতে পারে। সুতরাং জৈবিক ব্যবস্থাপনার হবে হাওর রক্ষার একটা মূল পদক্ষেপ।

উপদেষ্টা আরও বলেন, কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে যে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে, তাকে বলা হচ্ছে অল ওয়েদার সড়ক। কারণটা কি? পরে জানতে পারলাম যে, সব ঋতুতেই এই সড়ক সহনশীল। অথচ এই রাস্তা তৈরির মাধ্যমে ইতোমধ্যে সেই এলাকার নিদারুণ ক্ষতি হয়ে গেছে। অনেক টাকা খরচ করে এই রাস্তাটা করা অন্যায় হয়েছে। আমি মনে করি এই রাস্তা নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচার হওয়া দরকার।

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, মাছ ধরার জন্য ইতোমধ্যে আমরা কারেন্ট জাল বন্ধ করেছি। কিন্তু বর্তমানে চায়নাদুয়ারী নামক জালে মাছ ধরা হচ্ছে। এগুলো অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। জাল হবে মৎস্যজীবীদের একটা উপকরণ, অথচ এই জালটা হয়ে গেছে এক অবৈধ জাল। সুতরাং আমার মতে প্রকৃত জেলেরা এসব অবৈধ জাল ব্যবহার করে না। কিছু মৌসুমি মৎস্যজীবীরা এসব জাল ব্যবহার করা থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) সদস্য সচিব শরীফ জামিল, ধরার আহ্বায়ক রাশেদা কে. চৌধুরী, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব এবং জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ, হাওর সংস্কৃতি অধ্যয়ন এবং গবেষণা অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সজল কান্তি সরকার, মানবাধিকার কর্মী জাকিয়া শিশির, হাওর উন্নয়ন আন্দোলনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজের (সিএনআরএস) নির্বাহী পরিচালক ড. এম মোখলেসুর রহমান প্রমুখ।

এনএ/

banner

এ জাতীয় আরো সংবাদ

প্রকাশক: আবু সায়েম খালেদ
পরিচালক: এইচ. এম. মুহিউদ্দিন খান
আসকান টাওয়ার, ৬ষ্ঠ তলা, ১৭৪ ধোলাইপাড়
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪
ইমেইল: info@36news24.com
ফোন: 01401 400222