নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর
যশোরের শার্শা উপজেলায় সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের বসতবাড়ির সামনে থাকা জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির দুই নেতাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। উপজেলার ৭ নম্বর কায়বা ইউনিয়নের বাগুড়ী পালপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধশতাধিক হিন্দু পাল সম্প্রদায়ের মানুষ শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও যশোর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় ৯০ বছর ধরে তারা ওই এলাকায় বসবাস করে আসছেন। তাদের দখলে থাকা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জমিতে সম্প্রতি সিমেন্টের পিলার বসিয়ে দখলের চেষ্টা চালান বিএনপির স্থানীয় নেতারা।
অভিযুক্তরা হলেন শার্শা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহম্মেদ, উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক মশিয়ার রহমান এবং তাদের সহযোগী চটা সিরাজ, লাল্টু, টুটুল, ও সাঈদ।
স্থানীয় কয়েকজন পাল পরিবারের সদস্য জানান, তারা মাটি দিয়ে তৈরি আসবাব ও হাড়িপাতিল তৈরির পৈতৃক পেশায় নিয়োজিত। বসতবাড়ির সামনে দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা যে জমি ভোগদখল করে আসছেন, সম্প্রতি তা দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন অভিযুক্তরা। তাদের অভিযোগ, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাব খাটিয়ে হুমকি-ধামকিও দিচ্ছেন।
ভুক্তভোগী গৌরচন্দ্র পাল বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষের আমল থেকে এই জমি আমাদের দখলে। এখন প্রভাবশালীরা এসে পিলার বসিয়ে জমি দখল করে নিচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছি না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত তাজউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, “আমরা কোনো হিন্দুদের জমি দখল করিনি। তারা বহু বছর ধরে সওজের জমি দখল করে রেখেছে। আমরা নিয়মমাফিক ডিসিআর (জমির ডিসপজাল রিসিভ) নিয়েছি। এখনো জমি দখল করিনি, জমিতেও যাইনি।”
তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত দিয়েছেন কায়বা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, “তাজউদ্দিন ও মশিয়ার আমার নামে জমির ডিসিআর করেছে। আমি কিছুই জানি না। তাদের কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে চাই।”
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. নাজিব হাসান বলেন, “লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এনএ/