কাশ্মীরের পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকা। চারপাশে পাইন বন আর বরফ ঢাকা পাহাড়ের কোলে পর্যটকেরা তখন প্রকৃতির সৌন্দর্যে বিভোর। ঠিক সেই সময়, মঙ্গলবার দুপুর ২টার ঠিক আগে, হঠাৎ করেই উদিত হয় নরকসম এক দৃশ্য।
পাইন বনের দিক থেকে বেরিয়ে আসে পাঁচজন সশস্ত্র মুখোশধারী সন্ত্রাসী। আধুনিক রাইফেল, শরীরে লাগানো বডিক্যাম আর অব্যর্থ টার্গেট। মাত্র ১০ মিনিটে তারা কেড়ে নেয় ২৬টি প্রাণ।
ভারতীয় নিরাপত্তা সূত্র বলছে, হামলাটি চালানো হয়েছে তিনটি ফোকাস স্পটে—যেখানে সর্বোচ্চ পর্যটক উপস্থিত ছিল। সবগুলো স্পটেই গুলির শব্দ একসঙ্গে শোনা যায়। এটিই প্রমাণ করে, এটি ছিল ভীষণভাবে পরিকল্পিত।
হামলা শেষে সন্ত্রাসীরা যেদিক থেকে এসেছিল, সেদিক দিয়েই পাশের ঘন জঙ্গলে পালিয়ে যায়।
বৈসরন উপত্যকা গাড়িচলাচলের উপযোগী নয়। সেখানে পৌঁছাতে হয় পায়ে হেঁটে বা পনি রাইডে। ফলে পুলিশ বা সেনা সদস্যদের পৌঁছাতে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা সময় লাগে।
অবস্থা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, উদ্ধারকারী দল পৌঁছানোর আগেই অনেকেই রক্তক্ষরণে মারা যান। সময়মতো চিকিৎসা পেলে হয়তো প্রাণে বাঁচানো যেত অনেককে।
নিহত ২৬ জনের মধ্যে ২৫ জনই ছিলেন ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটক। বাকি একজন, বিলাল আহমেদ, পনি চালক হিসেবে দীর্ঘদিন বৈসরনে কাজ করতেন। নিহতদের মধ্যে দুই শিশুও ছিল, যাদের পরিবার এখনো হাসপাতালে শোকে পাথর হয়ে আছে।
হামলার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরবে সফর করছিলেন। তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করে ফিরে আসেন। টুইট করে বলেন, “এই জঘন্য হামলার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতেই হবে। কেউ রেহাই পাবে না।”
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদপুষ্ট একটি গোষ্ঠী রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে কাশ্মীরে এ ধরনের হামলায় পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ সন্ত্রাসীদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
সূত্র: এনডিটিভি
এনএ/