৩ মে কেন মহাসমাবেশ ডেকেছে হেফাজত? যা বললেন ইসলামাবাদী

by hsnalmahmud@gmail.com

হাসান আল মাহমুদ >>

আগামী ৩ মে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটি জানিয়েছে, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে এই মহাসমাবেশ। এতে সারাদেশ থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশ নেবেন।

বিজ্ঞাপন
banner

কী কারণে ৩ মে সমাবেশ ডেকেছে হেফাজতে ইসলাম? এমন প্রশ্নে সংগঠনটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী ৩৬ নিউজকে বলেন, মূলত পাঁচটি দাবিতে সেই সমাবেশ ডাকা হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ১. ফ্যাসিবাদের আমলে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গণহত্যার বিচার। ২. বহুত্ববাদের পরিবর্তে সংবিধানে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল। ৩. নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ও কমিশন বাতিল। ৪. ভারতের মুসলমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে উদ্যোগ ও ওয়াকফ আইন বাতিল। ৫. ফিলিস্তিন দখলদার মুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা।

৫ দাবির মধ্যে তৃতীয় দাবির বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের গঠন করা ১২ টি সংস্কার কমিশনের অন্যতম একটি সংস্কার কমিশন হলো ‘নারী সংস্কার কমিশন’। গত ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ঈ. তারিখে তারা অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সাহেবের কাছে ৩১৮ পৃষ্ঠাব্যাপী এক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। যাতে মোট ১৭ টি অধ্যায় রয়েছে। প্রতিটি অধ্যায়ে অনেক ধারা, উপধারা ও অনুচ্ছেদ রয়েছে। বিশাল এই সংস্কার প্রতিবেদনের কিছু অনুচ্ছেদ সরাসরি কুরআন-হাদীস বিরোধী। কিছু অনুচ্ছেদ আংশিক কুরআন-হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক। এসব প্রস্তাবনা সরকার যাতে না মানে তার জন্য এই সমাবেশ।

এসময় তিনি ৩৬ নিউজের কাছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে নারী কমিশনের আনা প্রতিবেদনের যেসব ধারা কুরআন-হাদীস বিরোধী তার সংক্ষিপ্ত একটি তালিকা পেশ করেন।

এক.

‘নারী সংস্কার কমিশন’ এর প্রতিবেদনের একাদশতম অধ্যায়ের ১১.৩.১ এর ‘ক’ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নারীদের সম্পত্তির সমান উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে মুসলিম ও হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করা জরুরী। উল্লিখিত অনুচ্ছেদে ‘সম্পত্তিতে সমান উত্তরাধিকার’ বিষয়টি সরাসরি কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক। পবিত্র কুরআন থেকে দলিল:

لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الأُنثَيَيْنِ

অর্থ: একজন পুরুষের জন্য আছে দুই নারীর সমান অংশ।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১১)

দুই.

প্রতিবেদনের পঞ্চম অধ্যায়ের ৩.২.৩ এর ‘খ’ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, তালাকের তথ্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ও কাজী অফিসের মধ্যে যাচাইয়ের জন্য তথ্য বিনিময়ের (ডিজিটাল এক্সেস) ব্যবস্থা করা, যাতে কম বয়সে বিবাহ ও বহুবিবাহ রোধ করা যায়। উল্লিখিত এই অনুচ্ছেদের ‘বহুবিবাহ রোধ’ অংশটি কুরআন ও হাদীসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

কুরআন থেকে দলীল:

فانكحوا ما طاب لكُم مِّنَ النِّسَاءِ مَثْنَى وَثُلاثَ وَرُبَاعَ

অর্থ: তবে তোমরা যেসব নারীকে পছন্দ করো, তাদের মধ্যে দুই, তিন বা চার জনকে বিয়ে করো। (সুরা নিসা, আয়াত: ৩)

উল্লিখিত আয়াতে সামর্থ থাকলে ও ন্যায়বিচার করার ক্ষেত্রে কোনো সংশয় না থাকলে একের অধিক বিবাহের কথা বলা হয়েছে। অথচ কমিশনের সংস্কার প্রতিবেদনে বহুবিবাহ রোধ করার কথা বলা হচ্ছে।

হাদীস থেকে দলীল:

عن عبدالله بن مسعود رضي الله عنه قال: قال لنا رسولُ الله صلى الله عليه وسلم: ((يا معشرَ الشباب، مَن استطاع منكم البَاءَةَ فليتزوج، فإنه أغضُّ للبصر، وأحصن للفرج، ومَن لم يستطع، فعليه بالصوم؛ فإنه له وِجَاءٌ))؛ متفق عليه.

তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে। কেননা, বিয়ে তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান হিফাজত করে এবং যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম পালন করে। কেননা, সওম তার যৌনতাকে দমন করবে। (বুখারী শরীফ: ৫০৬৬, মুসলিম শরীফ: ১৪০০)

তিন.

বইয়ের দশম অধ্যায়ের শিরোনামে রয়েছে, ‘শরীর আমার, সিদ্ধান্ত আমার’। উক্ত অংশটি সরাসরি কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক।

পবিত্র কুরআন থেকে দলীল:

ألا له الخلق والأمر

অর্থ: ‘সতর্ক হও, সৃষ্টি ও আদেশ একমাত্র তাঁরই (আল্লাহর)।’ (সুরা আল-আরাফ, আয়াত ৫৪)।

চার.

দশম অধ্যায়ের ১০.২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সমাজে প্রচলিত প্রথা কুসংস্কার ও মাসিক সম্পর্কে ভ্রান্ত ও নেতিবাচক ভ্রান্ত ধারণা নারী ও কিশোরীদের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বড় বাধা’। সংস্কার প্রতিবেদনের এই অংশটি কুরআনের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক।

পবিত্র কুরআন থেকে দলিল:

ويسألونك عن المحيض قل هو أذى فاعتزلوا النساء في المحيض ولا تقربوهن حتى يطهرن فإذا تطهرن فأتوهن من حيث أمركم الله إن الله يحب التوابين ويحب المتطهرين ﴾ [ البقرة: 222

অর্থ: তারা আপনাকে ঋতুস্রাব (মাসিক) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলুন, এটি একপ্রকার কষ্ট। সুতরাং ঋতুমতী অবস্থায় নারীদের থেকে দূরে থাকো এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের সঙ্গে সহবাস করো না। যখন তারা পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন আল্লাহ যেভাবে তোমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন, সেভাবেই তাদের কাছে গমন করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবা গ্রহণকারীদের ভালোবাসেন এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২২২)

হাদীস থেকে দলীল:

عن أبي مسعود عقبة بن عمرو الأنصاري البدري رضي الله عنه قال: قال رسول الله (ص): إن مما أدرك الناس من كلام النبوة الأولى: إذا لم تستح فاصنع ما شئت. (رواه البخاري).

অর্থ: আবু মাসউদ উকবা ইবনু আমর আল-আনসারী আল-বদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ বলেছেন: “আগের নবীদের বাণীসমূহ থেকে যে কথাগুলো মানুষ পেয়েছে, তার একটি হলো: ‘যদি তোমার লজ্জা না থাকে, তবে তুমি যা খুশি তাই করো।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নম্বর: ৩৪৮৩ ও ৬১২০)।

পাঁচ.

চতুর্থ অধ্যায়ের ৪.১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নারী ও শিশু সংক্রান্ত নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সহায়তা করে এটি নারীর অধিকার রক্ষা ও জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ এবং পরামর্শ প্রদান করে। এখানে পরোক্ষভাবে ট্রান্সজেন্ডার এর বিষয়ে বলা হয়েছে। যা সরাসরি কোরআন ও হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক।

পবিত্র কুরআন থেকে দলীল:

وَلَأُضِلَّنَّهُمْ وَلَأُمَنِّيَنَّهُمْ وَلَءَامُرَنَّهُمْ فَلَيُبَتِّكُنَّ ءَاذَانَ ٱلْأَنْعَٰمِ وَلَءَامُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ ٱللَّهِ ۚ وَمَن يَتَّخِذِ ٱلشَّيْطَٰنَ وَلِيًّا مِّن دُونِ ٱللَّهِ فَقَدْ خَسِرَ خُسْرَانًا مُّبِينًا

অর্থ: ‘আর আমি (শয়তান) অবশ্যই তাদেরকে নির্দেশ দেব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করবে। আর যে কেউ আল্লাহকে বাদ দিয়ে শয়তানকে বন্ধু বানায়, সে তো স্পষ্ট ক্ষতিতে পড়ে।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১১৯)

হাদিস শরীফ থেকে দলীল:

لَعنَ رسُولُ اللَّهِ ﷺ المُتَشبِّهين مِن الرِّجالِ بِالنساءِ، والمُتَشبِّهَات مِن النِّسَاءِ بِالرِّجالِ” رواه البخاري

রাসুল (সাঃ) ওসব নারী-পুরুষকে লা’নত(অভিশাপ) করেছেন, যারা পুরুষ হয়ে নারীর বেশ ধারণ করে আর যারা নারী হয়ে পুরুষের বেশ ধারণ করে।

ছয়.

ষষ্ঠ অধ্যায়ের ৬.৩.১ এর ‘ক’ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, স্ত্রী ও সন্তানের ভরণপোষণ, দেনমোহর, উত্তরাধিকার, অভিভাবকত্ব ও নাগরিকত্ব আইনে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা তথা ইসলামী আইনে থাকা নারী ও পুরুষের মধ্যকার বৈষম্য দূর করা।

উল্লিখিত এ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে নারী ও পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। যা সরাসরি কোরআন ও সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

পবিত্র কুরআন থেকে দলীল:

الرجال قوامون على النساء بما فضلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ

অর্থ: পুরুষেরা নারীদের অভিভাবক (অভিযোগ-দায়িত্বশীল), কারণ আল্লাহ তাদের একের উপর অপরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। (সুরা নিসা, আয়াত: ৩৪)

لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الأُنثَيَيْنِ

অর্থ: একজন পুরুষের জন্য আছে দুই নারীর সমান অংশ।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১১)

সাত.

তৃতীয় অধ্যায়ের ৩.২.২.১.৪ এর ‘খ’ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, শিশু ও দত্তক গ্রহণ সংস্কার করে আইনি দত্তক গ্রহণ বিষয়ক একটি স্বতন্ত্র আইন প্রণয়ন করা। যা শিশুটিকে দত্তক পরিবারে অন্তর্ভুক্ত হিসেবে স্বীকৃতি দিবে। পূর্ণ উত্তরাধিকার প্রদান করবে এবং শিশুটিকে গর্ভজাত সন্তানের মত একই আইনে সুবিধা প্রদান করবে।

উল্লিখিত এ অনুচ্ছেদে দত্তক শিশুকে গর্ভজাত শিশুর ন্যায় বিধানের কথা বলা হয়েছে। যা সরাসরি কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক।

পবিত্র কুরআন থেকে দলীল:

وَمَا جَعَلَ أَدْعِيَاءَكُمْ أَبْنَاءَكُمْ ۚ ذَٰلِكُمْ قَوْلُكُم بِأَفْوَاهِكُمْ ۖ وَاللَّهُ يَقُولُ الْحَقَّ وَهُوَ يَهْدِي السَّبِيلَ

অর্থ: “আর তোমাদের দত্তক পুত্রদেরকেও আল্লাহ তোমাদের প্রকৃত পুত্র বানাননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আর আল্লাহ সত্য কথা বলেন এবং তিনিই সঠিক পথের দিশা দেন।” (সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৪)

আট.

তৃতীয় অধ্যায়ের ৩.২.৩.১.১ এর ‘গ’ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বহুবিবাহ প্রথা বিলুপ্ত করতে হবে। এখানে বহুবিবাহ নিষেধের কথা বলা হয়েছে যা সরাসরি কোরআন ও সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক। পবিত্র কুরআন থেকে দলীল:

وَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تُقْسِطُواْ فِى ٱلْيَتَٰمَىٰ فَٱنكِحُواْ مَا طَابَ لَكُم مِّنَ ٱلنِّسَآءِ مَثْنَىٰ وَثُلَٰثَ وَرُبَٰعَ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُواْ فَوَٰحِدَةً أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَٰنُكُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰٓ أَلَّا تَعُولُواْ

অর্থ: “আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, ইয়াতিমদের ব্যাপারে ন্যায়বিচার করতে পারবে না, তবে যেসব নারী তোমাদের পছন্দ, তাদের মধ্যে থেকে দুই, তিন বা চারজনকে বিয়ে করো। (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩)

নয়.

দ্বাদশ অধ্যায়ের ১২.৩.১১ এর ‘জ’ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, শ্রম আইনে যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান। এখানে যৌন কর্মকে স্বাভাবিক কর্ম হিসেবে দেখানো হয়েছে। যা কোরআন সুন্নাহর সাথে সংঘর্ষিক। পবিত্র কুরআন থেকে দলীল:

 الزَّانِيَةُ وَالزَّانِي فَاجْلِدُوا كُلَّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا مِائَةَ جَلْدَةٍ ۖ وَلَا تَأْخُذْكُم بِهِمَا رَأْفَةٌ فِي دِينِ اللَّهِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ۖ وَلْيَشْهَدْ عَذَابَهُمَا طَائِفَةٌ مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ

অর্থ: “ব্যভিচারিণী নারী ও ব্যভিচারী পুরুষ তাদের প্রত্যেককে একশ বেত্রাঘাত করো। আল্লাহর ধর্মে তাদের প্রতি কোন ধরনের দয়া যেন তোমাদেরকে নিরুৎসাহিত না করে, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখো। আর তাদের শান্তির সময় মু’মিনদের একটি দল যেন উপস্থিত থাকে।” (সূরা আন-নূর, আয়াত: ২)

فمن ابتغى وراء ذلكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ

অর্থ: “আর যারা এ ছাড়া অন্য কিছু কামনা করে, তারা সীমালঙ্ঘনকারী।” সূরা আল-মু’মিনুন, আয়াত: ৭)

ولا تقربوا الزنى إنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا

অর্থ: “আর ব্যভিচারের নিকটেও যেয়ো না। নিশ্চয় তা এক অশ্লীল কাজ এবং খুবই নিকৃষ্ট পথ।” (সূরা আল-ইসরা,

আয়াত: ৩২)

হাদিস থেকে দলীল:

كانَ نَبِيُّ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عليه وسلَّمَ إذَا أُنْزِلَ عليه كُرِبَ لذلكَ، وَتَرَبَّدَ له وَجْهُهُ، قالَ: فَأُنْزِلَ عليه ذَاتَ يَومٍ، فَلُقِيَ كَذلكَ، فَلَمَّا سُرِّيَ عنْه، قالَ: خُذُوا عَنِّي، فقَدْ جَعَلَ اللَّهُ لهنَّ سَبِيلًا؛ الثَّيِّبُ بالثَّيِّبِ، وَالْبِكْرُ بالبِكْرِ، الثَّيِّبُ جَلْدُ مِائَةٍ، ثُمَّ رَجْمٌ بالحِجَارَةِ، وَالْبِكْرُ جَلْدُ مِائَةٍ، ثُمَّ نَفْيُ سَنَةٍ.

অর্থ: “তোমরা আমার কাছ থেকে জেনে নাও, তোমরা আমার কাছ থেকে জেনে নাও! আল্লাহ তাদের (ব্যভিচারিণীদের) জন্য একটি পথ নির্ধারণ করেছেন: বিবাহিত নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে একশ’ বেত্রাঘাত এবং পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ড (রজম)। আর অবিবাহিত নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে একশ’ বেত্রাঘাত এবং এক বছর দেশ থেকে নির্বাসন।” (মুসলিম: ১৬৯০, আহমাদ: ২২৭০৩, ইবনে মাজাহ: ৪৪৪৩)

দশ.

তৃতীয় অধ্যায়ের ৩.২.১.১.৩ এর ‘ক’ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, যেহেতু রাষ্ট্র একটি ইহজাগতিক স্বত্তা সেহেতু কোন ধর্মীয় বিধান অনুসরণ করে সংবিধান শুরু হওয়া উচিত নয়। তাছাড়া একটি ধর্মকে প্রাধান্য দেয়া ধর্মনিরপেক্ষতা

নীতির সাথে সংঘর্ষিক। তাই অনুচ্ছেদটি বাতিল করা প্রয়োজন।

উল্লিখিত এই অনুচ্ছেদে স্পষ্টত ধর্মনিরপেক্ষতাকে সমর্থন করা হয়েছে। যা কোরআনের সাথে সংঘর্ষিক।

পবিত্র কুরআন থেকে দলীল:

وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ

অর্থ: “আর যে কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো জীবনব্যবস্থা গ্রহণ করতে চায়, তা কখনোই তার কাছ থেকে গ্রহণ করা হবে না: এবং আখিরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫)

إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللَّهِ الإسْلامُ

অর্থ: “নিশ্চয় আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য ধর্ম হলো ইসলাম।” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯)

চলবে……

হাআমা/

banner

এ জাতীয় আরো সংবাদ

প্রকাশক: আবু সায়েম খালেদ
পরিচালক: এইচ. এম. মুহিউদ্দিন খান
আসকান টাওয়ার, ৬ষ্ঠ তলা, ১৭৪ ধোলাইপাড়
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪
ইমেইল: info@36news24.com
ফোন: 01401 400222