ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুদ্ধপ্রবণ আচরণ শুধু পাকিস্তানের জন্য নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার শান্তির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খান। কারাবন্দি এই নেতা বলেন, মোদির সাম্প্রতিক আগ্রাসী অবস্থানের কারণে রাজনৈতিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও পাকিস্তানের জনগণ একক কণ্ঠে ভারতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে আইনজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ মন্তব্য করেন তিনি। পাকিস্তানি দৈনিক দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল এ তথ্য জানিয়েছে।
ইমরান খান বলেন, ‘যদিও আমরা বর্তমান অবৈধ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করি, তথাপি জাতি এখন একতাবদ্ধ হয়েছে— ভারতের আগ্রাসন ও মোদির বিপজ্জনক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে। এই মনোভাব গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি।’
কাশ্মীর নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় সাম্প্রতিক হামলার দায় যথারীতি পাকিস্তানের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে ভারত। তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালের পুলওয়ামা ঘটনার সময়ও এমন চেষ্টা করা হয়েছিল। তখনও আমরা তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি ভারত। এখন আবার সেই পুরোনো কৌশল।’
কাশ্মীরীদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার পুনর্ব্যক্ত করে ইমরান খান বলেন, ‘জাতিসংঘের গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী কাশ্মীরীদের অধিকার রক্ষায় আমরা সবসময় অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলাম, আছি।’
‘আরএসএস মতাদর্শে পরিচালিত ভারত সরকার’
মোদি সরকারকে চরমপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস-এর মতাদর্শে পরিচালিত আখ্যা দিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘এই সরকার শুধু ভারতের মুসলিম জনগোষ্ঠী নয়, কাশ্মীরেও নিপীড়ন চালাচ্ছে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর কাশ্মীরে দমন-পীড়ন আরও বেড়েছে। এর ফলে কাশ্মীরীদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা আরও প্রবল হয়েছে।’
ইমরান খান বলেন, মোদির নেতৃত্বে ভারত যদি এই আগ্রাসী কৌশল চালিয়ে যায়, তাহলে তা ভবিষ্যতে বড় ধরনের আঞ্চলিক সংঘাতের জন্ম দিতে পারে।
তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের প্রতি গভীর শোক ও সহানুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনার প্রকৃত তদন্ত না করে যদি পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়, তাহলে তা শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশ গঠনের পথে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে।’
এনএ/