মুফতি আব্দুল মজিদ, সৌদি আরব থেকে >>
আজ মসজিদে হারামে আসরের নামাজ পড়লাম, খুবই নোংরা অশ্লীল কথা ও বাজে একটি গানের সুর এক হাজি সাহেবের মোবাইল থেকে হারামের নামাজিদের কানে ভেসে আসলো। দেখলাম, আশপাশের সবাই বিরক্ত হয়ে লোকটাকে খুঁজছেন।
অবস্থা দেখে মনে হল, একটি বার্তা আল্লাহর ঘরে আগন্তুক মেহমান সকল হাজি সাহেবের কাছে পৌঁছে দেয়া দরকার ।
যিনি বা যাদের আত্মীয়স্বজন হজে আসবেন, অনুগ্রহ করে তাদের একটু জানিয়ে দেওয়ার আবেদন করছি।
আল্লাহর পবিত্র ঘরে প্রবেশের সাথে সাথে মোবাইল সাইলেন্ট (নিঃশব্দ) করে ফেলা আবশ্যক। এর সাথে সাথে মোবাইলের রিংটোন পরিবর্তন করে আল্লাহর ঘরের উপযোগী কোনো রিংটোন সেট করে হজে আসা কর্তব্য।
যে মহান ঘরের দিকে সেজদা না দিলে আল্লাহ তাআলা আপনার-আমার কোনো সেজদা গ্রহণ করবেন না, সে ঘর কত মর্যাদাপূর্ণ! সে ঘরের সম্মান রক্ষা করা কত জরুরি! বিষয়টি একটু ভাবা দরকার।
নিজের অতীত জীবনের জঘন্য সব গুনাহ থেকে মুক্তিলাভের জন্য যে ঘরে আসার সৌভাগ্য হয়েছে, সে ঘরকে আমি নিজের বর্তমানের গুনাহ দিয়ে আরো নাপাক করছি না তো? পবিত্র হজ পালনকারী খোদার একজন নগণ্য বান্দা হিসেবে এ ঘরে আসার আগে মনস্তাত্বিক ও শারীরীক যে প্রস্তুতি দরকার সেটার ব্যাপারে উদাসীনতার এটি একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ভাবা যায়, কত বড় স্পর্ধা! যেখান থেকে আল্লাহ তাআলার রহমত, ক্ষমা ও অনুগ্রহ নিয়ে নিষ্পাপ হয়ে আমি ফিরে যেতে চাই, সেখানে অসাবধানতা ও অসচেতনতার কারণে আমি আরো বেশি গজবের ভেতর ডুবে যাচ্ছি। আল্লাহ মাফ করুন।
এ ঘরের মর্যাদা আমার দ্বারা বৃদ্ধি হোক বা না হোক, মর্যাদা ক্ষুণ্ন যাতে না হয় সকলের এ চেষ্টা করা উচিত। এ ঘরের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার মত কোনো কাজ যদি কেউ করে বা সে ব্যাপারে সতর্ক না হয়, তাহলে তিনি জালেম ও কাফের বাদশাহ আবরাহার হস্তি বাহিনীর করুণ পরিণতির ঘটনাটি স্মরণ করতে পারেন।
যে পরিণতি আবরাহা বাদশাহর হয়েছিল আমরা চাই সেটা যেন আমার-আপনার জীবনে ফিরে না আসে।
পবিত্র কাবা শরিফের মর্যাদা ও সম্মান অন্তরে ধারণ করার জন্য ত্রিশ নম্বর পারার সুরা ফিলের তরজমা ও শানে নুজুলটি দেখে নেওয়া যেতে পারে। তাহলে আল্লাহর ঘরে কীভাবে সময় পার করতে হয় এ ব্যাপারে একটু ধারণা পাওয়া যাবে, এবং সতর্ক হয়ে হজ ওমরায় আসা সহজ ও সার্থক হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুন। আমিন।
এআইএল/