আমিরুল ইসলাম লুকমান >>
আজ বুধবার (২৮ মে) আইন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ড. মো. রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এবং আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়েছে, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের প্রেরিত সব মামলার এজাহার এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চার্জশিট আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির নিকট অবিলম্বে দাখিলের অনুরোধ করা হচ্ছে।
এই বিজ্ঞপ্তি ও পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রায় ১৬ হাজার মামলা, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ১ হাজার ২০০টি মামলার তালিকা প্রদান করে।
অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ মাত্র কয়েকদিন আগে মঙ্গলবার (২০ মে) ৪৪টি মামলা প্রত্যাহারের তালিকা প্রদান করেছে। এসব মামলার কাগজপত্র পরীক্ষা করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
আইন মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি ও আইন উপদেষ্টার উক্ত তথ্যের ভেতর ব্যাপক বিভ্রান্তি ও ভুল তথ্য থাকার অভিযোগ করে নিজের ফেসবুক পোস্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক। তার স্ট্যাটাসটি ৩৬নিউজ পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো,
‘আজ (২৮ মে) দুপুরে মাননীয় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সাহেব তার ফেসবুক পোস্টে মামলা প্রত্যাহার বিষয়ে কিছু কথা লিখেছেন। সেখানে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার বিষয়ে বিলম্বের অভিযোগ নিয়ে তিনি তার মন্তব্য লিখেছেন। এক পর্যায়ে তিনি লিখেছেন,
‘অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ মাত্র কয়েকদিন আগে (২০ মে ২০২৫ তারিখে) ৪৪টি মামলার তালিকা প্রদান করেছে’।
বিষয়টি হেফাজতের নেতাকর্মীদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে এবং করাটাই স্বাভাবিক ।
এ বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বশীল হিসেবে আমার বক্তব্য হল,
আমিসহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে মামলা বিষয়ক উপকমিটির দায়িত্বশীলগণ এ বিষয়ে গত চার-পাঁচ মাস যাবত সব ধরনের চেষ্টা চালিয়েছি। আমি নিজেই মাননীয় আইন উপদেষ্টা মহোদয়ের সাথে তার কার্যালয়ে দুই বার সাক্ষাৎ করেছি এবং তাদের দেয়া গাইডলাইন অনুসরণ করে আমরা আমাদের সকল নথিপত্র সুবিন্যস্তরূপে জমা দিয়েছি।
প্রথমত, মামলাগুলো ডিসি অফিসে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হলে আমরা তা জমা দেই। ঢাকার ডিসির নিকট মামলা জমা দেয়ার সময় মহানগর সভাপতিসহ আমি নিজে উপস্থিত ছিলাম। এরপর একাধিকবার ঢাকার পাবলিক প্রসিকিউটরের অফিসে গিয়ে কাজের অগ্রগতির তদারকি করেছি এবং ডিসি অফিসেও গিয়েছি। সেখান থেকে সুপারিশসহ ডিসি অফিসে মামলাগুলো জমা হলে ডিসি অফিস থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় এবং মন্ত্রণালয় থেকে কিছু মামলার বিষয়ে প্রত্যাহারের জন্য কার্যক্রম পরিচালনার সংকেতও দেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে পিপি এবং আদালতের মধ্যখানে বিষয়টি ঝুলন্ত রয়েছে ।
আজ হঠাৎ এই মুহূর্তে আমরা জানতে পারলাম আইন উপদেষ্টা নিজেই মামলার তালিকা নিচ্ছেন। ৪৪টি মামলার তালিকা জমা দেওয়ার বিষয়টি হেফাজতের অফিশিয়াল কোনো বিষয় নয়। হেফাজত থেকে অত্যন্ত সুবিন্যস্ত রূপে মামলার যাবতীয় কাগজপত্র বহু পূর্বেই নির্দিষ্ট নিয়মমাফিক জমা করা হয়েছে এবং প্রতিটি সাক্ষাতে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছি।
সর্বশেষ গত ২৫ তারিখে প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে এ বিষয়টি আমরা উত্থাপন করলে উপস্থিত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান সাহেবকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই এক মাসের মধ্যে মামলার বিহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।
স্মর্তব্য যে, এই ধরনের তালিকা জমা দেয়ার ঘটনা বিভিন্ন দপ্তরে সচিব ও উপদেষ্টা পর্যায়ে বহুবার ঘটেছে এবং আমরা তালিকা জমা দিয়েই যাচ্ছি।’
এআইএল/