দুবাইয়ে বসবাস ও কাজের সুযোগ চাওয়া বাংলাদেশিরা এবার পাচ্ছেন এক সুবর্ণ সুযোগ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা চালু করা হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের জন্য।
এতদিন ধরে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পেতে হলে কমপক্ষে দুই মিলিয়ন দিরহাম বা প্রায় ৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার সম্পত্তি কিনতে হতো, কিংবা বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করতে হতো। কিন্তু নতুন এই নীতির আওতায় মাত্র এক লাখ দিরহাম, অর্থাৎ প্রায় ৩৩ লাখ টাকার কিছু বেশি ফি দিলেই মিলবে গোল্ডেন ভিসা।
বিশেষ করে যারা পেশাজীবী, উদ্যোক্তা, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি, স্টার্টআপ, সেবামূলক বা বৈজ্ঞানিক খাতে দক্ষতা রাখেন—তাঁদের জন্য এটি এক বিশাল সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে।
রায়াদ গ্রুপ নামের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এই নতুন প্রক্রিয়ার বাস্তবায়নে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়াদ কামাল আইয়ুব এটিকে বাংলাদেশি ও ভারতীয়দের জন্য “সুবর্ণ সুযোগ” বলে অভিহিত করেছেন।
গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে প্রার্থীর অতীত ইতিহাস, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার এবং আর্থিক পটভূমি খতিয়ে দেখা হবে। কোনো রকম অপরাধমূলক ইতিহাস থাকলে ভিসা পাওয়া কঠিন হবে।
আবেদন করতে হবে ওয়ান ভাস্কো সেন্টার, রায়াদ গ্রুপের নিবন্ধিত অফিস বা নির্ধারিত অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে। প্রাথমিক অনুমোদনের পর আবেদনকারীকে দুবাই ভ্রমণ করতে হবে চূড়ান্ত প্রক্রিয়ার জন্য।
এই ভিসা একবার পেলে তা স্থায়ী, সম্পত্তি বিক্রি বা মালিকানা বদল হলেও বাতিল হবে না। এটাই মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার সবচেয়ে বড় সুবিধা।
এছাড়া এই ভিসা পাওয়া ব্যক্তিরা তাদের পরিবারকে দুবাইয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। পাশাপাশি বাসার গৃহকর্মী ও ব্যক্তিগত গাড়িচালক রাখারও অনুমতি থাকবে। আর চাইলেই তারা দুবাইয়ে ব্যবসা কিংবা চাকরিতে যুক্ত হতে পারবেন কোনো বাড়তি বাধা ছাড়াই।
এই ভিসা বর্তমানে একটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু করা হয়েছে শুধু ভারত ও বাংলাদেশের জন্য। সফল হলে এটি আরব আমিরাতের অন্যান্য সিইপিএ (Comprehensive Economic Partnership Agreement) চুক্তিভুক্ত দেশগুলোর জন্যও উন্মুক্ত করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্যোগের ফলে শুধু মধ্যপ্রাচ্যে অভিবাসনের পথই সহজ হচ্ছে না, বরং দক্ষ বাংলাদেশিদের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে।
এনএ/