লন্ডনে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপের সমর্থনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে অন্তত ৪৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, এই গোষ্ঠীকে সমর্থন করার জন্য ৪৪৬ জনকে, পাঁচজনকে পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলার জন্য আর দু’জনকে জনশৃঙ্খলা লঙ্ঘনের জন্য এবং একজনকে বর্ণগত অপরাধের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
গত জুলাই মাসে ব্রিটিশ সরকার প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে ঘোষণা করে।
ওয়েস্টমিনস্টারের পার্লামেন্ট স্কয়ারে ডিফেন্ড আওয়ার জুরিজ আয়োজিত এই বিক্ষোভে শত শত ফিলিস্তিনপন্থী মানুষ অংশ নেয়। বিক্ষোভকারীরা ‘আমি গণহত্যার বিরোধিতা করি। আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার আগে পার্লামেন্ট স্কোয়ার থেকে নিষিদ্ধ সংগঠনকে সমর্থন করার অভিযোগে ৪৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে এক পোস্টে পুলিশ বলেছিল, ‘সময় লাগবে, কিন্তু প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন জানানো প্রত্যেককেই আমরা গ্রেপ্তার করব।’
যেসব বিক্ষোভকারীর বিস্তারিত তথ্য প্রক্রিয়া চলাকালীন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়, প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের সমর্থনে আর কোনও বিক্ষোভে যোগ দেবেন না এই শর্তে তাদের জামিন দেওয়া হয়। আর যারা তাদের বিস্তারিত তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান বা যাদের পরিচয় যাচাই করা যায়নি, তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
সমালোচকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকারে হস্তক্ষেপ এবং ইসরাইলের গাজা যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন দমনের প্রচেষ্টা। টেররিজম অ্যাক্ট ২০০০ অনুযায়ী, সংগঠনটির সদস্যপদ গ্রহণ বা সমর্থন প্রকাশ এখন ফৌজদারি অপরাধ, যার শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী সাচা দেশমুখ বলেছেন, গাজায় চলমান গণহত্যার কারণে ক্ষুব্ধ মানুষ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীনে প্রতিবাদ প্রকাশ করার অধিকার রাখে।
তিনি বলেন, ‘পার্লামেন্ট স্কয়ারে বিক্ষোভকারীরা সহিংসতা উস্কে দেয়নি এবং তাদের সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করা সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক।’
দেশমুখ আরো বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবাদ আইনের সমালোচনা করে আসছি, কারণ এটি অস্পষ্টভাবে লেখা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ। এই গ্রেপ্তার প্রমাণ করে আমাদের উদ্বেগ ন্যায্য ছিল।’
এআইএল/