সাংবাদিক গ্রেপ্তার-হয়রানি বন্ধে আইন করার দাবি মাহমুদুর রহমানের

by Kausar Labib

সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধে আইন করার জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, সরকারকে আইন করে দিতে হবে যে, বিচার শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত কোন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেয়া যাবে না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে মামলা হবে, তারপর বিচার হবে, বিচারে যদি দোষী সাব্যস্ত হয় সেটা হবে।

কিন্তু একজন মানহানি মামলা করবে, ভুয়া মামলা করবে অথবা আইসিটি আইনে মামলা করবে আর গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবে-এটা আমরা হতে দিতে পারি না। মতপ্রকাশের জন্য সাংবাদিক হয়রানি যাতে না করা হয়, সেজন্য সোচ্চার হতে সাংবাদিক নেতাদের প্রতিও আহবান জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন
banner

সোমবার মগবাজারে দৈনিক সংগ্রাম প্রকাশনার ৫০ বছর পূর্তি-সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন মাহমুদুর রহমান। দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আযম মীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুভেচ্ছা জানাতে আসেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজ, যুগান্তর সম্পাদক কবি আব্দুল হাই শিকদার, বিএফইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আয়ুব ভুইয়া, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, সহযোগী সম্পাদক আলফাজ আনাম, বার্তা সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন, মায়ের ডাকের সানজিদা ইসলাম তুলি সহ বিশিষ্টজনরা।

মাহমুদুর রহমান বলেন, সংগ্রাম কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষ কারণে আজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই। আমাকে ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল দ্বিতীয়বার যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী ও ইসলামপ্রিয় মানুষের প্রিয় পত্রিকা আমার দেশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, তখন তিন দিন এই প্রেস থেকে আমার দেশ ছাপানো হয়েছিল। তারপর এখানে পুলিশ এসে আমার সহকর্মী ও সংগ্রামের কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা-আমার মা এবং সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ ভাইয়ের নামে মামলা দেয়া হয়েছিল। সেই মামলায় আমার মা এবং আসাদ ভাইকে কয়েকদিন আত্মগোপনে থাকতে হয়েছিল। পরে নিম্ন আদালতে গিয়ে আমার বৃদ্ধা মাকে এবং আসাদ ভাইকে জামিন নিতে হয়েছিল।

আমার দেশ সম্পাদক বলেন, আমি তখন ডিবিতে রিমান্ডে ছিলাম। তাই আমার মা ও আসাদ ভাইয়ের মামলার বিরুদ্ধে আমার প্রতিবাদ করার কোন উপায় ছিল না, আমি অনশন করেছিলাম। পরবর্তী আসাদ ভাইয়ের ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছে তা আমি বিদেশে নির্বাসিত জীবনে থাকা অবস্থায় জানি। আসাদ ভাইয়ের ওপর কত জুলুম-অত্যাচার গেছে তা জানতাম। কারণ তার ছেলে অস্ট্রেলিয়াতে শিবলী সোহায়েল মিলে একটা থিংকট্যাঙ্ক করেছিলাম, সাউথ এশিয়ান পলিসি ইনিশিয়েটিভ-এসএপিআই। সেটা থেকে আমরা একটা রিসার্চ পেপার বের করতাম ‘বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনা’। তার মধ্যে বড় একটা স্টাডি করেছিলাম, সেই পেপারে আমরা আওয়ামী লীগকে একটি টেররিস্ট পার্টি বলা হয়েছিল।

কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়-আমার দেশের ওপর যখন জুলুম হয়েছে, আসাদ ভাইকে যখন ধরে নিয়ে গেছে, তখন কিন্তু সাংবাদিক নেতারা মোটামুটি নীরব ভুমিকা পালনে করেছে। তথাকথিত সুশীল পত্রিকাগুলো শুধু নীরবই থাকেনি আসাদ ভাইয়ের জুলুমের পক্ষে তারা অবস্থান নিয়েছিল, ফ্যাসিবাদি সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। আমাদের এই ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এখন রাষ্ট্রের পরিবর্তন হয়েছে। অন্তত আমি মনে করি মালিকপক্ষের চাপ থাকতে পারে, কিন্তু সরকার থেকে এখন পর্যন্ত সত্য কথা বলায় কোন চাপ দেয়া হচ্ছে না।

তবে সম্প্রতি দুইএকটি ক্ষেত্রে, ইউটিউবে শুনেছি, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের দুইজনকে ডিজিএফআই চাপ দিয়ে নাকি চাকরিচ্যুত করেছে। যদি এটা হয়ে থাকে তাহলে সবাই মিলে এটার প্রতিবাদ করা উচিত। কোন সরকারের আমলে কোন সাংবাদিকের চাকরি যেন তার লেখার জন্য, মত প্রকাশের জন্য না হারায়। আমার মতের বিরুদ্ধে হলেও তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। যদিও ফ্যাসিবাদের সময়ে আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা কেউ বলেনি। তারপরও আমরা কিন্তু বলে গেছি। যেই ক্ষমতায় আসুক, আমরা কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে যাব।

এএ/

banner

এ জাতীয় আরো সংবাদ

প্রকাশক: আবু সায়েম খালেদ
পরিচালক: এইচ. এম. মুহিউদ্দিন খান
আসকান টাওয়ার, ৬ষ্ঠ তলা, ১৭৪ ধোলাইপাড়
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪
ইমেইল: info@36news24.com
ফোন: 01401 400222