ইসলামপন্থী স্কলাররা মিডিয়ায় প্রাপ্য সম্মান পান না: মাহমুদুর রহমান

by Kausar Labib

কেবল ইসলামপন্থী হওয়ায় স্কলার ও গুণীজনরা তাদের মেধা ও অবদানের যোগ্য সম্মান মিডিয়াতে পান না মন্তব্য করে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, অথচ বাংলাদেশকে ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ বলা হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে মুসলমান স্কলারদের ইসলামী বিশ্বে তাদের কোথাও মূল্যায়ন করা হয় না, তারা দেশার মূল্যায়নের জন্য পশ্চিমা দেশের দিকে তাকিয়ে থাকে। ছাত্র-জনতার ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে এই বৃত্ত ভামার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং গুণী সম্পাদক হিসেবে সংবর্ধনা দেওয়ায় মানারাতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে গুণী তিন সম্পাদককে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অব জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজের একযুগ পূর্তিতে দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, দৈনিক সংগ্রামের সাবেক সম্পাদক আবুল আসাদ ও দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন
banner

মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মিডিয়া সেই স্বাধীনতার পর থেকেই একটি বিশেষ চিন্তাধারার ব্যক্তিদের হাতে জিম্মি ছিল। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সম্পাদক বা সাংবাদিক কিংবা বুদ্ধিজীবী বলতে তাদেরকেই বুঝায়। বিশেষ বিশেষ বড় পত্রিকায় বিশিষ্টজনদের তালিকা দেখেন তাহলে দেখবেন, তাদের প্রায় সবাই একটি বিশেষ চিন্তাধারা লালন করেন। তারা প্রধানত ভারতপন্থী এবং ইসলামবিদ্বেষী। এটা না হলে আপনি বিশিষ্টজন হতে পারবেন না। অন্যদেরকে বিশিষ্টজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।

বিগত এক-এগারোর পরে নয়া দিগন্তে কলাম লেখার মধ্য দিয়ে সংবাদপত্রে আসার কথা তুলে ধরে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, তখন আমার কাছে মনে হয়েছিল, ওই সরকার ভারতের দালাল ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশের অধিকাংশ মানুষ সেই সময় এই বিষয়টি বুঝতে পারেননি। আমি ওই সরকারের পেছনের উদ্দেশ ও ষড়যন্ত্র ধরতে পেরেছিলাম। তখন মনে হলো— প্রথাগত বৃত্তের বাইরে এসে কোনো একজনের কলম ধরা উচিত এবং আমি কলম ধরেছিলাম।

এক-এগারো সরকারের বিরুদ্ধে প্রতি বুধবার নয়া দিগন্তে একের পর এক পোস্ট লেখার কথা উল্লেখ করে বেশ কয়েকটি আলোচিত বইয়ের লেখক মাহমুদুর রহমান বলেন, সেই ঐতিহ্য আমি এখনো অব্যাহত রেখেছি। আমার দেশ-এও মন্তব্য প্রতিবেদন প্রতি বুধবার লেখছি। কারণ, লেখক মাহমুদুর রহমানের জন্ম হয়েছিল প্রতি বুধবারের লেখার মধ্য দিয়ে। তৎকালীন ডিজিএফআই’র চাপ উপেক্ষা করে অবিকৃতভাবে লেখা ছাপানোর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

২০১৩ সালে আমার দেশ বন্ধ ও প্রেস সিলগালা করার এবং নিজের কারাগারে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে মজলুম সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, তখন দুই দিন সংগ্রামের প্রেস থেকে আমার দেশ ছাপা হওয়ার কারণে পুলিশ তাদের অফিসে হামলা করে এবং আমাদের ও তাদের কর্মচারীদের এরেস্ট করে নিয়ে গেল। ওই কারণে আমার মায়ের বিরুদ্ধে এবং সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদের আমি ডিবিতে রিমান্ডে থাকার সময় অনশন করেছিলাম। এ ছাড়া আমার আর কোনো প্রতিবাদ করার ছিল না। ৮ দিন অনশন করার পর হাসপাতালে ভর্তি করে এবং আমি অনশন প্রত্যাহার করি।

দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ বলেন, নিজের দিকে তাকালে কোনো গুণ খুঁজে পাই না। ৫৫ বছরের দিকে তাকালে আমাকেই পাই না। আমরা গুণসৃষ্থিকারী নই, যারা গুণ সৃষ্টি করে, তাদের কথা তুলে ধরি। গত ১৫ বছরে সাংবাদিকতা সাংবাদিকদের হাতে ছিল না। যারা পালন করে, তাদের হাতে চলে গেছে। মানবসেবার মিশন দিয়ে সাংবাদিকতা শুরু হলেও এখন তা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। দেশ, মানুষ ও জাতীয় স্বার্থ না দেখে নিজেদের লাভ দেখছে সংবাদপত্রগুলো।

সংবাদপত্রকে শিল্প ঘোষণা করায় পুঁজি এবং মুনাফা প্রাধান্য পাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, কোন কাজে লাভ বেশি, সেটির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে এখন। ফলে বেশি মুনাফা পেলে দেশ, মানুষ ও জাতীয় স্বার্থ বাদ দিয়ে দেশও বিক্রি করে দেবে তারা। এই প্রবণতা ক্রমান্বয়নে বাড়ছে। তবে ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান একটা মিরাকল ঘটেছে। ১৫ বছরে সব দল মিলে যা না পারছে, সেখানেও হয়ত দুর্নীতি ছিল। কিন্তু তরুণরা সেটা করে দেখিয়েছে, তাদের কোনো লোভ ছিল না, দেশপ্রেম থেকে করেছে এবং সফল হয়েছে। ফলে উপরের দিক থেকে নিচের দিকে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতি দূর করতে না পারলে সব গ্রাস করবে।

এএ/

banner

এ জাতীয় আরো সংবাদ

প্রকাশক: আবু সায়েম খালেদ
পরিচালক: এইচ. এম. মুহিউদ্দিন খান
আসকান টাওয়ার, ৬ষ্ঠ তলা, ১৭৪ ধোলাইপাড়
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪
ইমেইল: info@36news24.com
ফোন: 01401 400222