জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, বিগত এক যুগ ধরে রাজনীতি আর গণমানুষের রাজনীতি ছিল না। রাজনীতি ছিল টাকা দিয়ে মনোনয়ন কেনা এবং রাতের আঁধারে ভোট কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাওয়া। এখন আমরা যখন জনগণের রায়ে বাংলাদেশে নতুন করে নির্বাচনের আশা করছি তখন আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। কারণ জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফেরত পাবে। জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে আমরা সংসদে যেতে চাই।
সারজিস বলেন, আমাদের যে রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মাত্র এক মাস হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে ইলেকশনের কথা শুনতে পাচ্ছি। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে বলা হচ্ছে। ৩০০ আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এ চ্যালেঞ্জ দিতে আমরা অভ্যস্ত এবং প্রস্তুত রয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা মাঠে-ঘাটে, অলিতে-গলিতে ও বাড়িতে জনগণের কাছে যাব। আমরা দেশকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখি এবং যা করতে চাই, আমাদের যা প্রত্যাশা সেগুলো তুলে ধরতে জনগণের কাছে যাব। এতো ত্যাগ ও রক্তের পরে জনগণের চাওয়া কী সেগুলো শুনতে চাই।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রংপুর নগরীর কেরামতিয়া জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা জানান।
মুখ্য সংগঠক সারজিস বলেন, আজ থেকে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের কমিটির যে ফরমেশন প্রক্রিয়া সেদিকে চলে যাব। এপ্রিল মাসের মধ্যে জেলা এবং উপজেলা কমিটিগুলো দেখতে পাবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি জেলা এবং উপজেলায় আমাদের অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন। যারা নতুন একটি বাংলাদেশ প্রত্যাশা করে। যারা মনে করে তরুণরা অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা আছে। এই নেতৃত্ব যেমন তরুণ নির্ভর হবে এবং নেতৃত্বে আমাদের অগ্রজরাও অবশ্যই থাকবেন। সামনে এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে তরুণদের সাহস ও উদ্যম যেমন দরকার, তেমন অগ্রজদের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা অনেক বেশি প্রয়োজন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এনসিপির পরিকল্পনা প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জ ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া আমাদের লক্ষ্য এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব। চোখের সামনে জুলাই-আগস্টে যে রক্তাক্ত নিথর দেহগুলো ছিল সেগুলোকে যদি আমরা সামনে রাখতে পারি তাহলে আমরা এই ২৪’র জুলাই অভ্যুত্থানের যে স্পিরিট সেটা থেকে কখনো বিচ্যুত হবো না। আমরা যদি জনগণের জন্য কাজ করতে পারি তাহলে জনগণই তাদের রায় দিয়ে সংসদে নিয়ে যাবে।
এ ছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বাজেট বৈষম্যে উল্লেখ করে মুখ্য সংগঠক সারজিস বলেন, বিগত ১৬ বছরে যত বাজেট হয়েছে সেগুলো ছিল অঞ্চলভিত্তিক। লবিং ভিত্তিক বাজেটে এক্ষেত্রে দক্ষিণাঞ্চল সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। যে যার মতো করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লবিং করে বাজেট বরাদ্দ নিজের জায়গায় নিয়ে গেছে। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই অঞ্চলের মানুষের যতটুকু প্রাপ্য ততটুকু বরাদ্দ রাখবে- আমরা এ আশা করি। অন্তর্বর্তী সরকারের উপর আমরা সে আস্থা রাখতে চাই। বাংলাদেশের জন্য আমাদের যতটুকু কন্ট্রিবিউশন এবং উত্তরবঙ্গের মানুষ যতটুকু প্রাপ্য ততটুকু এখন থেকে যেন আমরা পাই। সেটা যদি হয় তাহলে বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
এনএ/