শরীয়তপুরের জাজিরায় ভয়াল রূপ নিয়েছে পদ্মা নদী। একের পর এক ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও স্থাপনা গিলে খাচ্ছে নদী। সবশেষ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের আলম খাঁর কান্দি জামে মসজিদের দোতলা ভবনটি। মুহূর্তের মধ্যে পাকা মসজিদটি ধসে গিয়ে বিকট শব্দে পানির নিচে তলিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদের ধ্বংসস্তূপ ও ভাঙনের ভয়াবহ দৃশ্য দেখে অনেক মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্থানীয়দের দাবি, এভাবে চলতে থাকলে পুরো এলাকা মানচিত্র থেকেই হারিয়ে যাবে।
প্রত্যক্ষদর্শী আবির মালত বলেন, ‘সকালে খবর পাই মসজিদের গায়ে ফাটল ধরেছে। আমরা দৌড়ে নদীর পাড়ে যেতেই হঠাৎ বিকট শব্দে মসজিদটা নদীতে তলিয়ে যায়। এমন দৃশ্য জীবনে কখনও দেখিনি। মনে হচ্ছিল, সবকিছু শেষ হয়ে গেল।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর থেকে জিরো পয়েন্ট এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। এরপর থেকে কয়েক ধাপে রক্ষা বাঁধের প্রায় ৭৫০ মিটার এলাকা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এর প্রভাবে ইতোমধ্যে অন্তত ৫০টি বসতবাড়ি এবং প্রায় ৩০টি দোকান নদীগর্ভে চলে গেছে।
ভাঙনের ভয়ে শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। ঝুঁকির মুখে রয়েছে আরও অন্তত ৬০০ পরিবার এবং মাঝিরঘাট বাজারের ২০০টিরও বেশি দোকান।
ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড অস্থায়ীভাবে জিওব্যাগ ও জিওটিউব ফেলছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে, যার ব্যয় প্রায় ৫ কোটি টাকা। কিন্তু তাতেও ভাঙনের গতি রোধ করা যাচ্ছে না। বরং সেই জিওব্যাগসহ আরও ১৫০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে চলে গেছে।
এনআর/