তালেবানের সাথে ভারতের নতুন খাতির কেনো?

|| মুহিম মাহফুজ ||

by Kausar Labib

৩৬নিউজ প্রতিবেদন>>

২০২১ সালে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তান থেকে এক প্রকার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল ভারত। তবে বৈশ্বিক পটপরিবর্তনের ফলে প্রতিবেশী দেশকে উপেক্ষা করার নীতি থেকে সরে এসে কাছে টানতে দ্রুতই আগ্রহী হলো নয়াদিল্লি। তারই অংশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি তালেবানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

বিজ্ঞাপন
banner

বিশ্লেষকদের অভিমত, শীর্ষ পর্যায়ের এ বৈঠক প্রমাণ করে, আফগান নেতাদের সঙ্গে ভারত গভীর সম্পর্ক করতে আগ্রহী।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয় ,এ বৈঠকে আঞ্চলিক পরিস্থিতি, বাণিজ্য, মানবিক সহযোগিতা ,উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পুনরায় শুরু করা এবং আফগানিস্তানের শরণার্থী ও স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতার বিষয়ে আলাপ হয়েছে।

এই বিবৃতি যে আনুষ্ঠানিকতা মাত্র তা বলার অপেক্ষায় রাখে না। বৈঠকের সময় ও আলোচ্য বিষয়গুলোই বলে দেয়, এই অঞ্চলের ভূরারাজনৈতিক বাস্তবতার দ্রুত পরিবর্তন ঘটে যেতে পারে। কারণ কয়েকদিন আগে আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। এতে নিহত হয় ৪৬ জন। যার নিন্দা জানিয়েছে ভারত। এর কদিন পরেই হল এ মিটিং। তাই এই মিটিংয়ের সহজ অর্থ হচ্ছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত আফগানিস্তানকে পাশে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

তালেবান সরকার গত বছরের নভেম্বরে মুম্বাইয়ের আফগান কনসুলেটে একজন ভারপ্রাপ্ত কনসাল নিয়োগ দিয়েছে। যদিও এ নিয়োগের বিষয়ে ভারত সরকার কোন মন্তব্য করেনি। তবে কাকতালীয়ভাবে এই নিয়োগ হওয়া মাত্রই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জয়েন্ট সেক্রেটারি আফগান সফর করেন। অন্যদিকে, ২০২২ সালে ভারত কাবুলে তার দূতাবাস আংশিক খোলার জন্য একটি ছোট টেকনিক্যাল টিম পাঠায়। কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে আর দূরত্ব রাখতে চায় না দক্ষিণ এশিয়ার শক্তিশালী দেশটি।

গত ২০ বছরে আমেরিকা নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানে ভারত সরকার সহায়তা ও নির্মাণ খাতে বিনিয়োগ করেছিল তিন মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। তার আগে ২০০১ সালে তালেবান সরকারের পতনের পর শুরুর দিকে যেসব দেশ কাবুলে কূটনৈতিক মিশন পাঠিয়েছে তাদের মধ্যে ভারত ছিল অন্যতম। তবে দেশটিতে আমেরিকার মদনপুষ্ট সরকারের পতনের পর দিল্লি নিজেকে ভিন্ন এক পরিস্থিতিতে আবিষ্কার করে। বিভিন্ন দেশ নতুন পরিস্থিতি মানিয়ে নিলেও ভারত আফগানিস্তানকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে।

দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ শক্তি হয়েও আফগানিস্তানে বিভিন্ন ক্ষমতাধর গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগে ব্যর্থ হয়েছে ভারত। তার আগে আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইকে নিঃস্বার্থ সমর্থন দিয়েও ভারত ভুল করেছিল। এরপর একই ঘটনা ঘটেছে আশরাফ গনির ক্ষেত্রেও। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ভারত একই আচরণ করেছে। শেখ হাসিনাকেও দিয়েছে নির্বিচার সমর্থন।

তালেবান সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর কারণে আফগানিস্তান যে উপকৃত হবে এটা পরিষ্কার। তবে ভারত সরকার কতখানি উপকৃত হতে পারবে সে বিষয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া যায় না।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তালেবান সরকারের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা বাড়ার কারণে ভারতের মুসলমানদের জন্য এটি ইতিবাচক হতে পারে। এমনকি তার প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও, যদি বাংলাদেশ এই সম্পর্ককে কাজে লাগাতে চায় তবেই শুধু এটি সম্ভব।

এমএনএকে/

banner

এ জাতীয় আরো সংবাদ

প্রকাশক: আবু সায়েম খালেদ
পরিচালক: এইচ. এম. মুহিউদ্দিন খান
আসকান টাওয়ার, ৬ষ্ঠ তলা, ১৭৪ ধোলাইপাড়
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪
ইমেইল: info@36news24.com
ফোন: 01401 400222