আমিরুল ইসলাম লুকমান >>
মিশরের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহাসিক উচ্চতর ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পোর্ট সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত ‘কুল্লিয়াতুদ দিরাসাতিল ইসলামিয়া’ (ইসলামিক স্টাডিজ কলেজ, পোর্ট সাঈদ)-এ গত ২৩ বছর ধরে ইসলামবিষয়ক শিক্ষাদান করে যাচ্ছেন একজন খ্রিস্টান নারী প্রফেসর। তার নাম ড. ক্রিস্টিন হান্না। কপটিক খ্রিস্টান এই অধ্যাপক ইসলামী জ্ঞান ও গবেষণায় নিজের অসামান্য নিষ্ঠা ও দক্ষতা দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
ড. হান্নার এই অপ্রত্যাশিত যাত্রা শুরু হয় ইসলামবিষয়ক একাডেমিক শিক্ষা গ্রহণের আগ্রহ থেকে। গবেষণার প্রতি আগ্রহ তাকে ইসলামী শিক্ষা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। ২০০২ সালে তৎকালীন শাইখুল আজহার ড. মুহাম্মদ সৈয়দ তানতাবি ড. হান্নার চাকরির আবেদনপত্রে মাত্র কয়েকটি শব্দ লেখেন, ‘সত্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে ক্রিস্টিন সম্পর্কে যে সিদ্ধান্ত প্রয়োজনীয় মনে করেন, তা গ্রহণ করুন।’
এই নির্দেশনাই তার প্রভাষক হিসেবে নিয়োগের পথ প্রশস্ত করে। এভাবে তিনি ‘কুল্লিয়াতুদ দিরাসাতিল ইসলামিয়া’ (ইসলামিক স্টাডিজ কলেজ)-এর লেকচারার পদে নিয়োগ পান।
তিনি মিশরের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন। ২০০৬ সালে সহকারী অধ্যাপক এবং ২০২৩ সালে পূর্ণ অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। বর্তমানে তিনি আরবি ভাষা ও ইসলামী শিক্ষা বিভাগে অধ্যাপনা করছেন।
ড. ক্রিস্টিন জানান, ইসলাম সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে তিনি তাজবিদ সহকারে কোরআনের সুরা মুখস্থ করেন। নবী মুহাম্মদ সা.-এর বহু হাদিসও আত্মস্থ করেন। যদিও শিক্ষকগণ তাকে কোরআন হাদিস মুখস্ত করার এই সিলেবাস থেকে অব্যাহতি দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি অব্যাহতির সুযোগ গ্রহণ করেননি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস পূর্ণ করেছেন।
তিনি বলেন, ইসলামের শিক্ষা ও গবেষণা আমাকে ভালোবাসা, সদ্ব্যবহার এবং সত্যবাদিতা শিখিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, ধর্ম মানুষকে নৈতিকতা, ন্যায়বিচার ও পারস্পরিক সম্মান শেখানোর জন্যই অবতীর্ণ হয়েছে।
সূত্র: আল-আরাবিয়া ডটনেট, আল-ইয়াওমুস সাবি।
(সংশোধনী: এ নিউজটি প্রথমে অনুবাদ করা হয়েছিল আল-আরাবিয়া উর্দু থেকে। সেখানে পোর্ট সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আল-আরাবিয়া আরবি, আল-ইয়াওমুস সাবিসহ অন্যান্য আরবি পোর্টালে পোর্ট সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলা হয়েছে। সম্ভবত আল-আরাবিয়া উর্দুর অসতর্কতায় তথ্যবিভ্রাট ঘটেছে। নিউজে তথ্যবিভ্রাটের সংশোধনী দেওয়া হল। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত)
এআইএল/