আমিরুল ইসলাম লুকমান >>
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গুজরানওয়ালা জেলার লদ্ধেওয়ালা ওরাইচ থানায় অবস্থিত ‘কোরআন মহল’-এ এক লাখের বেশি নতুন ও পুরাতন কোরআনের কপি সংরক্ষিত রয়েছে। দূরদূরান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ এই কোরআন মহল দর্শনের জন্য আসছেন।
‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট উর্দু’কে কোরআন মহলের তত্ত্বাবধায়ক মুহাম্মদ কালিমুল্লাহ জানান, তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সেবক। তার পিতা বহু বছর আগে নিজ হাতে সম্পূর্ণ কোরআন শরীফের একটি কপি লিখেছিলেন, যা প্রস্তুত করতে তার দশ বছর সময় লেগেছিল।
কালিমুল্লাহ আরও জানান, ‘আমার পিতা কোরআন শরীফ লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তখন, যখন লেখার সব উপকরণ সহজে পাওয়া যেত না। তিনি বিশেষভাবে বেলজিয়াম থেকে কাগজ আনিয়েছিলেন, কিন্তু সেগুলোর আকার ছোট হওয়ায় চারটি কাগজ জুড়ে একটি বড় পৃষ্ঠা তৈরি করে তাতে কোরআন লেখা শুরু করেন।’
তিনি আরও বলেন, কোরআন লেখার এই ঐতিহাসিক কাজে তার পিতার কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধু সহায়তা করেছিলেন। লেখা সম্পূর্ণ করতে ব্যবহার করা হয়েছিল জাফরান, কস্তুরি, জমজমের পানি এবং গোলাপজল দিয়ে তৈরি বিশেষ কালি।
বর্তমানে কোরআন মহল জাদুঘরে এক লাখের বেশি কোরআনের কপি সংরক্ষিত রয়েছে। যেসব কোরআন শরীফ মানুষ পুরনো বা ক্ষতিগ্রস্ত মনে করে পানিতে ভাসিয়ে দেন বা দাফন করেন, সেগুলো এখানে সংগ্রহ করে নতুনভাবে বাঁধাই করে সম্মানের সঙ্গে সংরক্ষণ করা হয়।
কালিমুল্লাহ বলেন, ‘এই মহলে কোরআন সংরক্ষণ শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। অনেক দূর থেকে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ কোরআনের ভালোবাসায় এ জাদুঘর দেখতে আসেন।’
পাকিস্তানশাসিত আজাদ কাশ্মীর থেকে আগত এক দর্শনার্থী জানান, ‘এই স্থানে এসে আত্মিক শান্তি পাই। মনে হয় দুনিয়ার সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে।’
গুজরানওয়ালার স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমি দুই দিন আগে এসেছি, এখানে এসে মানসিক প্রশান্তি অনুভব করছি। আমি সবার প্রতি আহ্বান জানাবো, দুনিয়ার ব্যস্ততা ভুলে একবার হলেও এখানে এসে শান্তি খুঁজে নিন।’
সূত্র: ইন্ডিপেন্ডেন্ট উর্দু, ডেইলি ইসলাম।
এআইএল/