১৭ বছরের নির্বাসন শেষ করে দেশে ফিরতে চলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ঢাকার গুলশান-২ এর অভিজাত এলাকায়, অ্যাভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর ডুপ্লেক্স বাড়িতে তার বসবাসের জন্য সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ছায়াঘেরা দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত আধুনিক এ বাড়িটি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মালিকানাধীন ছিল, যা সম্প্রতি তারেক রহমানের নামে নামজারি করা হয়েছে।
আগে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এই বাড়িটি ভাড়া হিসেবে ব্যবহার করলেও গত ছয় মাস ধরে তা খালি পড়ে ছিল। এরপর শুরু হয় অভ্যন্তরীন সাজসজ্জা ও সংস্কার কাজ। জানা গেছে, বাড়িটিতে রয়েছে তিনটি শয়নকক্ষ, সুসজ্জিত ড্রয়িং-লিভিং রুম, সুইমিং পুলসহ নানা আধুনিক সুবিধা। বাড়ির নিরাপত্তা জোরদারে বাউন্ডারির ওপর বসানো হয়েছে অতিরিক্ত লোহার গ্রিল।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও লন্ডনে ফেরার আগে এই বাড়িটি পরিদর্শন করে গেছেন। এছাড়া ৪ জুন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বেগম খালেদা জিয়ার হাতে বাড়িটির কাগজপত্র তুলে দেন। এরপরই তা নামজারি করা হয় তারেক রহমানের নামে।
ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমান গ্রেফতার হন। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লন্ডনে যান এবং তারপর থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন। ২০১৮ সালে খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সেখান থেকেই দলের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
তার অনুপস্থিতিতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলায় সাজা দেওয়া হয় এবং শতাধিক মামলা দায়ের করা হয়। তবে ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের পাল্টে যাওয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সব মামলায় তিনি একে একে খালাস পান।
দলীয় ও ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হলেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চলছে যে, আগামী ৫ আগস্টের আগেই তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, তার দেশে ফেরার পথে এখন আর কোনো আইনি বা প্রশাসনিক বাধা নেই।
তাই দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষে এখন নেতাকর্মীদের চোখে মুখে আশার আলো—ফিরে আসছেন বিএনপির ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি তারেক রহমান।
হাআমা/