মুহাম্মাদ আল-আমিন রাকিব>>
২০১৩ সালের ৬ই এপ্রিলের লংমার্চে অংশগ্রহণ ও ৫ই মে ঢাকা অবরোধের কর্মসূচিতে গভীর রাতে মতিঝিলের রাজপথে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরে আসার পর থেকেই মনের মধ্যে সংকল্প দানা বাঁধতে শুরু করে ইসলাম এবং দেশের জন্য কিছু একটা করতে হবে। তাই একটি সংঘবদ্ধ কাফেলা খুঁজতে থাকি যারা দীর্ঘমেয়াদি ও নিয়মতান্ত্রিক ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে অন্যান্য সংগঠনের প্রতি উদার চিন্তা লালন করে ইসলামকে বিজয়ী আদর্শ রূপে বাস্তবায়নের জন্য নিরলসভাবে লৌকিকতা ও আত্ম প্রদর্শন বর্জন করে কাজ করতে থাকে। যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখো তাই পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন।
তারই ধারাবাহিকতায় ৫ বছর পর খুঁজে পাই আত্মত্যাগী ও সংগ্রামী এক কাফেলা বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস। কাজ করার জন্য বর্তমান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মুফতি রশীদ আহমদ ভাইকে জানাই। ওনার সহায়তায় ২০১৮ সালের কোন একদিন বর্তমান আমিরে মজলিস ও তৎকালীন যুব মজলিসের মুহতারাম সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক সাহেবের সাথে মুঠোফোনে কথা হয় এবং সংগঠনে কাজ করার আগ্রহের কথা জানাই।
প্রিয় রাহবারের নির্দেশনা পেয়ে সংগঠন বিভাগের সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান ভাইয়ের হাতে ফরম পূরণের মাধ্যমে যুব মজলিসের নেযামে সাংগঠনিক জীবন শুরু করি। সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে আড়াইহাজার, সোনারগাঁ, রূপগন্জ, বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা ও সদর থানায় বিভিন্ন সময়ে সফর করেছি। অধিকাংশ সফরে মহানগরীর সভাপতি মাওলানা মীর আহমাদুল্লাহ ভাইয়ের সফরসঙ্গী ছিলাম। পরবর্তীতে বর্তমান সভাপতি মাওলানা ফাতীহ মোহাম্মদ সোলাইমান ভাইয়ের সাথেও বিভিন্ন জায়গায় সফর করেছি। অন্যান্যদের তুলনায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যুব মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর ৩মাস পরপর তারবিয়তি সফরে যারা সাথী হয়েছেন তাদের সাথে আন্তরিকতা বেশি ছিলো। তারবিয়তি সফরের মুহুর্তগুলি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন হিসেবে স্মৃতির মণিকোঠায় লিপিবদ্ধ থাকবে।
এছাড়াও যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় তারবিয়তি মজলিসে ও শাখা দায়িত্বশীল সভায় দেশের বিভিন্ন জেলার দায়িত্বশীলদের সাথে সাক্ষাৎ হওয়ার কারণে আন্তরিক সম্পর্ক তৈরী হয়েছে। সংগঠনের ক্রান্তিলগ্নে প্রশাসনের টার্গেটে থাকার কারণে কিছুদিন নির্বাসিত ছিলাম। সেই সময়ে প্রতিকূল মুহুর্তে যারা সংগঠনের ডাকে সাড়া দিয়ে সাংগঠনিক নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেছিলেন তাদেরকে আন্তরিক শুকরিয়া জানাই। কেন্দ্র কর্তৃক নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর পুনর্গঠন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যুব মজলিসের সাংগঠনিক জীবনের ইতি ঘটলো।
সর্বোপরি, আমার কথা-বার্তা ও ব্যবহারে এবং সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রয়োগে যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আল্লাহর জন্য ক্ষমা করে দিবেন। আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব আমি পুরোপুরি হকের সাথে যথাযথ ভাবে পালন করতে পারি নাই। এজন্য আমি আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাই এবং আপনাদের কাছেও ক্ষমা চাই। এখন থেকে খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণমানুষের সংগঠন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে জীবনের বাকি সময় পার করে দিতে চাই। সকলের কাছে আন্তরিকভাবে দোয়া চাই। শেষকথা, যুব মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর নতুন নেতৃত্বের প্রতি আন্তরিক দোয়া ও সহযোগিতা বিদ্যমান থাকবে সবসময়। বুকভরা আশা নিয়ে যে স্বপ্ন আমরা অন্তরে লালন করেছিলাম তার যথাযথ বাস্তবায়ন যেনো আপনারা করতে পারেন সেজন্য রবের দরবারে আপনাদের সফলতার জন্য সর্বদা প্রার্থনা করবো ইনশাআল্লাহ। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আল্লাহর জমিনে আল্লাহর খেলাফত কায়েমের মেহনতের সাথে আত্মনিয়োগ করার তৌফিক দান করুক। আমিন।
লেখক: সাবেক সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগর।
এনএ/