তালেবান শাসনের কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া আফগান নারী ফুটবলাররা এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন ফিফার উদ্যোগে। সদ্য অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত একটি বিশেষ ট্যালেন্ট ক্যাম্পে অংশ নিয়ে তারা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।
২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর নারীদের জন্য সব ধরনের খেলাধুলা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ফলে জাতীয় নারী দলের খেলোয়াড়েরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলতে অযোগ্য হয়ে পড়েন। কারণ, ফিফা নিয়ম অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক ফুটবলে অংশ নিতে হলে স্বীকৃত জাতীয় ফেডারেশনের অনুমোদন বাধ্যতামূলক—যা তালেবান নিয়ন্ত্রিত আফগান ফুটবল ফেডারেশন নারীদের দেয় না।
তবে চলতি বছর মে মাসে নতুন একটি উদ্যোগ নেয় ফিফা। তারা ‘আফগান উইমেনস রিফিউজি টিম’ গঠনের অনুমোদন দেয় এবং স্কটল্যান্ড জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার পলিন হ্যামিলকে দলের কোচ নিয়োগ দেয়। হ্যামিল বলেন, “এই প্রজেক্ট অসাধারণ এক যাত্রা। মাঠে ফিরে আসা, একে অন্যের পাশে দাঁড়ানো—এই অভিজ্ঞতা খেলোয়াড়দের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
জুলাই মাসে সিডনিতে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক ট্যালেন্ট ক্যাম্পে অংশ নেন আফগান জাতীয় দলের সাবেক ২০ জনের বেশি খেলোয়াড়, যারা বর্তমানে বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছেন। এই ক্যাম্প থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ ২৩ সদস্যের দল গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে, যারা ২০২৫ সালের মধ্যেই একাধিক আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলবে।
ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের দেওয়া হচ্ছে—
- প্রয়োজনীয় ক্রীড়া সরঞ্জাম
- স্থানীয় ক্লাবের সঙ্গে সংযোগ
- মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা
- মিডিয়া প্রশিক্ষণ
- শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, ‘আমরা চাই নারীরা নিরাপদে খেলতে পারুক। এই দলটি কেবল একটি ফুটবল দল নয়, এটি তাদের সাহস, দৃঢ়তা এবং অধিকার পুনরুদ্ধারের প্রতীক।’
ক্যাম্পে অংশ নেওয়া খেলোয়াড় নীলাব বলেন, “এটা শুধু আমার নয়, গোটা আফগান নারীদের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ। আমরা একে অন্যকে সাহস জোগাচ্ছি। আমাদের দেশ ও নারীদের কথা বিশ্বকে জানানোর সুযোগ পাচ্ছি।”
ফিফার এই উদ্যোগকে নারী খেলাধুলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা।
হাআমা/